
রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি:
রৌমারী উপজেলায় হলহলি নদীর চরে অবৈধ ভাবে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন করায় সরকারি বরাদ্দের লক্ষ লক্ষ টাকার জিও ব্যাগ নদী গর্ভে বিলিন ও হুমকির মুখে পড়েছে অর্ধকোটি টাকার ব্রীজ।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রশাসনের কাছে বারবার অভিযোগ দিলেও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে বালু উত্তোলনে চ্যালেঞ্চ করছেন বালু ব্যবসায়ী ও ড্রেজার মালিক মুকুল ও মফিজ উদ্দিন। ইতিপূর্বে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু উত্তোলন বিষয়ে একাধিক পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলেও কোন ব্যবস্থা নেয়নি স্থানীয় প্রশাসন।
গত সোমবার সরেজামিনে গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার দাঁতভাঙ্গা ইউনিয়নের মিয়ারচর মুখতলা হলহলি নদী থেকে প্রায় এক বছর থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে মুকুল ও মফিজ উদ্দিন নামের দুই ব্যক্তি। বালু উত্তোলন করায় নতুন করে নদী ভাঙ্গনের সৃষ্টি হয়েছে। গতবছর বন্যার পানির স্রোতে ওই এলাকায় ভাঙ্গন দেখা দেয় এবং প্রায় ৫০টি পরিবার ভুমিহীন হয়। পরে স্থানীয়রা নদী ভাঙ্গনরোধে উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত আবেদন দিলে তারা সরেজমিনে তদন্ত করেন এবং হাজার হাজার জিও ব্যাগ দিয়ে নদী ভাঙ্গনরোধ করা হয়। এর কিছু দিন পর ওই এলাকায় মফিজ উদ্দিন ক্ষমতার দাপটে নদীতে দুটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বেপরোয়া ভাবে বালু উত্তোলন করে আসছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে ওই ব্রীজটি। অন্য দিকে একই ইউনিয়নের গাছবাড়ি এলাকায় হলহলি নদী থেকে একই ভাবে বালু উত্তোলন করছেন মুকুল মিয়া। এলাকার লোকজন বাধা দিতে গেলে জমির মালিক ও বাধা প্রদানকারিকে নানা ধরনের হুমকিসহ চ্যালেঞ্চ করে ওই বালু ব্যবসায়ী।
ড্রেজার মালিক মফিজ উদ্দিন নদীর তলদেশ থেকে বালু উত্তোলন করে অন্যের কাছে প্রতি এক হাজার বালু ৪ থেকে ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। মফিজের ভাস্যমতে সবাইকে ম্যানেজ করেই বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। বালু উত্তোলনে ৪০-৫০ ফুট গভীরতার সৃষ্টি হয়। এর ফলে প্রতিদিন বিশাল আকারে জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। সরকারি ভাবে জিও ব্যাগ ফেলে নদী ভাঙ্গনরোধ করার পরিকল্পনা ভেস্তে যাচ্ছে। অপর দিকে ভাঙ্গন বৃদ্ধি পেয়ে নদীর গতিপথ পরিবর্তনসহ ব্রীজ, স্থানীয়দের বসতিবাড়ি ও আবাদি জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে হুমকির মুখে পড়বে কয়েকটি গ্রাম।
স্থানীয়বাসিন্দা নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধীক ব্যক্তি জানান, দীর্ঘদিন থেকে এ জায়গায় বালু তুলছেন। তাতে ফসলি জমি ও বসতবাড়ি ভেঙ্গে গেছে। কিছু বলতে গেলে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর সরকারি মোবাইল নম্বরে কল করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি।