
মিয়ানমারে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প এবং ৬ দশমিক ৮ মাত্রার পরাঘাতে এখন পর্যন্ত ২৩ জন নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে ত্রাণ সংস্থাগুলো আশঙ্কা করছে, প্রকৃত মৃতের সংখ্যা কয়েকশ হতে পারে।
শুক্রবারের এই ভূমিকম্পের তীব্রতায় কেঁপে উঠেছিল থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককও। সেখানে নির্মীয়মাণ একটি বহুতল ভবন ভেঙে পড়ায় এখন পর্যন্ত অন্তত ৩ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আরও অন্তত ৮১ জন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়েছেন বলে জানিয়েছেন থাইল্যান্ডের উপ-প্রধানমন্ত্রী।
যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস জানিয়েছে, ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল মিয়ানমারের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর মান্দালয়ের ১৭ দশমিক ২ কিলোমিটার দূরে, মাটির ১০ কিলোমিটার গভীরে।
মান্দালয়ের একটি মসজিদ ধসে পড়ে ৩ জন নিহত হয়েছেন। ভূমিকম্পের সময় সেখানে নামাজ চলছিল। এছাড়া, রাজধানী নিপিধোর একটি হাসপাতাল থেকে ২০ জন নিহতের খবর নিশ্চিত হওয়া গেছে।
মিয়ানমারের দমকল বাহিনীর এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, তারা অনুসন্ধান শুরু করেছেন এবং ইয়াংগনের আশপাশে হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখছেন। তবে এখন পর্যন্ত বিস্তারিত তথ্য মেলেনি।
ভূমিকম্প-বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মিয়ানমারে গত ২০ বছরের মধ্যে এত শক্তিশালী ভূমিকম্প আর দেখা যায়নি। দেশটির সামরিক সরকার জরুরি অবস্থা জারি করেছে এবং আন্তর্জাতিক সহায়তা চেয়েছে।
এদিকে, থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পয়েতংতার্ন সিনাওয়াত্রাও দেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছেন এবং রাজধানী ব্যাংকককে ‘বিপর্যয় এলাকা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শুক্রবারের জন্য শহরের রেল চলাচল স্থগিত রাখা হয়েছে।
ভূমিকম্পের কারণে ব্যাংককে জরুরি বৈঠকে বসেছেন থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী। তবে ব্যাংককের গভর্নর জানিয়েছেন, আশঙ্কার তুলনায় ক্ষয়ক্ষতি তুলনামূলক কম হয়েছে। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, "প্রথমে আমরা ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করেছিলাম, তবে তেমনটা হয়নি। ব্যাংককের ভবনগুলো মানসম্মতভাবে তৈরি, তাই ক্ষয়ক্ষতি সামান্যই হয়েছে। জনগণকে আতঙ্কিত না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।"
শুক্রবারের এই ভূমিকম্পের প্রভাব চীনের কিছু এলাকাতেও অনুভূত হয়েছে। চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্র জানিয়েছে, ইউনান প্রদেশে কম্পন অনুভূত হয়েছে এবং সেখানে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৭ দশমিক ৯। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকাতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। কলকাতার কিছু অংশে মৃদু কম্পন টের পাওয়া গেছে। দিল্লি, বাংলাদেশ ও ভিয়েতনামেও ভূমিকম্পের প্রভাব অনুভূত হয়েছে।