Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / বরিশাল / বরিশালে শিক্ষার্থীদের দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ, যাত্রীদের ভোগান্তি - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

বরিশালে শিক্ষার্থীদের দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ, যাত্রীদের ভোগান্তি

March 08, 2025 08:36:18 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
বরিশালে শিক্ষার্থীদের দুই ঘন্টা সড়ক অবরোধ, যাত্রীদের ভোগান্তি

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে বরিশাল-কুয়াকাটা ও বরিশাল-ভোলা মহাসড়ক দুই ঘণ্টা অবরোধ করেন শিক্ষার্থীরা। শনিবার এই অবরোধের ফলে দক্ষিণের জেলাগুলোর সঙ্গে সারা দেশের সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির কারণে দুই মহাসড়কের দুই পাশে অসংখ্য যানবাহন আটকা পড়ে, ফলে যাত্রী ও চালকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ দায়ী ব্যক্তিদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শিক্ষার্থীরা বেলা সোয়া একটার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন। এরপর বেলা দেড়টার দিকে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা-ভোলা মহাসড়কের মোড়ে বাস ও তিন চাকার যানের (মাহিন্দ্রা) চালকদের মধ্যে মহাসড়কে চলাচল নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা, উত্তেজনা ও একপর্যায়ে একে অপরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী তানজিল আজাদ, রবিউল ইসলাম ও তরিকুল ইসলাম পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টা করলে তাঁদের ওপর চড়াও হন তিন চাকার যানের চালক ও স্থানীয় কয়েকজন ব্যক্তি। একপর্যায়ে তাঁদের তিনজনকে মারধর করা হয়।

শিক্ষার্থীরা জানান, তিন চাকার যানের চালক ও স্থানীয় পাঁচ থেকে সাতজন ব্যক্তি এ ঘটনায় জড়িত ছিলেন। সহপাঠীদের মারধরের খবর পেয়ে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা সেখানে ছুটে আসেন। এরপর বেলা ১১টার দিকে ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করেন তাঁরা। ফলে মহাসড়কের দুই পাশে যানজটের সৃষ্টি হয়। বরিশাল নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কেও তীব্র যানজট দেখা দেয়।

ঢাকার একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী অর্পিতা হাসান বলেন, "সকাল সাতটায় ঢাকা থেকে বাসে উঠেছি বরগুনায় গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার জন্য। এখানে এসে বেলা ১১টায় আটকা পড়েছি। একে তো রমজান মাস, তার ওপরে প্রচণ্ড গরম। কী যে দুর্বিষহ অবস্থা আমাদের, তা বোঝাতে পারব না।"

অবরোধ চলাকালে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন এবং অভিযুক্তদের বিচারের দাবি জানান। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সোনিয়া খান ও বন্দর থানা-পুলিশ ঘটনাস্থলে যান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে দায়ীদের শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন। এরপর বেলা সোয়া একটার দিকে প্রশাসনের আশ্বাসে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী তানজিল আজাদ বলেন, "বাস ও তিন চাকার যানের চালকদের মধ্যে ঝামেলা চলছিল। আমরা সেখানে গিয়েছিলাম যাতে মহাসড়কে কোনো বিশৃঙ্খলা না হয়। তখন এক সহপাঠীকে মারধর করা হয়। পরে আমরা আরও দুজন এগিয়ে গেলে আমাদেরও মারধর করা হয়। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।"

বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, "মারধরের ঘটনাটি দুঃখজনক। আমরা সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব। উভয় পক্ষের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি সমাধান করা হবে।"

প্রক্টর সোনিয়া খান বলেন, "শিক্ষার্থীদের মারধরের বিষয়টি জানার পরপরই আমি ঘটনাস্থলে যাই। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে ঘটনার বিস্তারিত শুনি। পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, যাতে দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়।" তিনি আরও জানান, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে হামলাকারীদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে এবং বিচারের আশ্বাস দেওয়ার পর শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহার করেছেন।