
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারী বৃষ্টির পানির কারণে শেরপুরে বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। নদীর পানির বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার ফলে গত ৪ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই বন্যায় এ পর্যন্ত ৭ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শনিবার (৫ অক্টোবর) সকাল থেকে সেনাবাহিনীর সদস্যরা পানিবন্দী মানুষদের উদ্ধারে কার্যক্রম শুরু করেছেন। স্থানীয় প্রশাসন এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও উদ্ধার কাজে সহযোগিতা করছে।
শনিবার সকালে নতুন করে শেরপুর সদর ও নকলা উপজেলার আরও ৬টি ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়েছে। পাহাড়ি ঢলের কারণে মহারশি, সোমেশ্বরী, চেল্লাখালি, ভোগাই ও মৃগী নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা বন্যা পরিস্থিতিকে আরো ভয়াবহ করে তুলেছে। বর্তমানে শেরপুরের ৫টি উপজেলার ২৮টি ইউনিয়নের দুই শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়েছে, এবং পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন দেড় লাখেরও বেশি মানুষ।
নকলা থানার ওসি হাবিবুর রহমান জানিয়েছেন, শনিবার রাতে নকলায় একজনের মৃত্যু হয়েছে। এছাড়া নালিতাবাড়ী উপজেলায় পাঁচজন ও ঝিনাইগাতীতে একজনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানা গেছে।
পাহাড়ি ঢলের প্রবল স্রোতে শেরপুর থেকে তিনআনী হয়ে নালিতাবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের রানীগাঁও সেতুর কাছে সড়ক ভেঙে যাওয়ার ফলে শনিবার দুপুর থেকে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। এছাড়া শেরপুর থেকে গাজীর খামার হয়ে নালিতাবাড়ীগামী রাস্তার কলসপাড় ইউনিয়নের ৪টি স্থানে প্রবল বেগে পানি প্রবাহিত হওয়ায় ওই সড়কে যানবাহন ও মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রণব কুমার কর্মকারের দেওয়া তথ্যমতে, ঝিনাইগাতী এবং নালিতাবাড়ী উপজেলায় ২ হাজার ৫৭টি মাছের ঘের ভেসে গেছে, যার ক্ষতির পরিমাণ প্রাথমিক হিসাবে ১১ কোটি টাকার বেশি।
শেরপুরের জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “জেলার বেশ কয়েকটি নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। দুর্গতদের উদ্ধার এবং শুকনো খাবার পৌঁছানোর জন্য আমরা কাজ করে যাচ্ছি।”