Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / স্বাস্থ্য / সর্বাধুনিক গবেষণায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সক্রিয়তা প্রমাণিত! - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

সর্বাধুনিক গবেষণায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সক্রিয়তা প্রমাণিত!

April 21, 2024 08:57:56 PM   অনলাইন ডেস্ক
সর্বাধুনিক গবেষণায় হোমিওপ্যাথিক ঔষধের সক্রিয়তা প্রমাণিত!

ডা. ধীমান রায়:
হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্রিয়াশীলতা বা সক্রিয়তা নিয়ে শতাব্দী ধরে তর্ক-বিতর্ক বিদ্যমান। মূলত উচ্চশক্তির হোমিওপ্যাথিক ঔষধে মূল দ্রব্যের কোনো মলিকিউল না পাওয়ায় প্রচলিত বিজ্ঞান যেমন এর ঔষধী ক্রিয়ার ব্যাপারে দ্বিধাগ্রস্ত। অন্যদিকে, হোমিওপ্যাথদের দাবি ছিল এটি বায়ো-এনার্জেটিক মেডিসিন, যেখানে মূল ঔষধী দ্রব্যকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় শক্তিতে রূপান্তর করা হয়। এই শত বৎসরের চিরায়ত দ্বন্দের অবসান ঘটেছে- অতি সাম্প্রতিক একটি গবেষণার ফলাফলে।

অতি সম্প্রতি International Academy of Classical Homeopathy (IACH) এর রিসার্চ টিম সম্প্রতি “Ultra-high dilutions analysis: Exploring the effects of potenti“ation by electron microscopy, Raman spectroscopy and deep learning” শিরোনামে একটি গবেষণা সম্পাদন করেন এবং  Journal of Molecular Liquids এ সেটা প্রকাশিত হয়; যেখানে ধাতব সোনা থেকে প্রস্তুত অরাম মেটালিকাম নামের একটি ঔষধকে ৬ঈ, ৩০ঈ ও ২০০ঈ শক্তিতে প্রস্তুত করা হয় এবং ইলেকট্রন মাইক্রোস্কোপ, রমন স্পেক্ট্রোস্কোপ ও ডিপ-লার্নিং এলগরিদমের মাধ্যমে পরীক্ষা করা হয়। তাতে ভিন্ন ভিন্ন শক্তিতে প্রস্তুত ঔষধগুলোর গঠন-বিন্যাস ও বৈশিষ্ট্যে পার্থক্য ধরা পড়ে, যার দ্বারা অত্যন্ত নিখূঁতভাবে তাদের প্রত্যেককে আলাদা আলাদাভাবে শনাক্ত করা ও শ্রেণিকরণ করা সম্ভব। গবেষণাটি প্রমাণ করে যে, হোমিওপ্যাথিক প্রক্রিয়ায় উচ্চশক্তিতে প্রস্তুত ঔষধ তাদের শক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকারের সক্রিয় বৈশিষ্ট্য ও ক্রিয়াশীলতাকে ধারণ করে। এককথায়, উচ্চশক্তির হোমিওপ্যাথিক ঔষধ একটি সক্রিয় উপাদান হিসাবে এবার বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণিত হলো।

হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ব্যাপারে সমালোচক মহলের মূলত আপত্তি ছিলো যে- এভোগাড্রো নাম্বারের উপর কোনো দ্রব্যের মলিকিউলই কোনো দ্রবণে অবশিষ্ট থাকে না, কাজেই হোমিওপ্যাথির উচ্চশক্তিগুলো সক্রিয় কোনো উপাদান হতে পারে না। কিন্তু প্রফেসর ভিথোলকাসের তত্ত্ব¡াবধানে ও ডা. ক্যামেলিয়া গ্রোসানের নেতৃত্বে গবেষক দল এভোগাড্রো নাম্বারের উপরের উচ্চশক্তিতেই তাদের পরীক্ষা সম্পাদন করেন এবং ইতিবাচক ফলাফলকে নিশ্চিত করেন। গবেষকদলের মতে, বিগত ২০০ বৎসর ধরে যে প্রশ্নটি সকলের মধ্যে দ্বিধার সৃষ্টি করে রেখেছিল- এই গবেষণার মাধ্যমে সেই দ্বন্দ্বের অবসান হলো এবং হোমিওপ্যাথি যে একটি বৈজ্ঞানিক চিকিৎসাপদ্ধতি সেটাও এর দ্বারা প্রমাণিত হলো। গবেষকদলের মতে, এটি হোমিওপ্যাথিক গবেষণার জগতে একটি নতুন দুয়ারকে উন্মোচন করেছে। এছাড়াও গবেষকদল আশা ব্যক্ত করেন- এই পরীক্ষণটি শুধু অরাম মেটালিকাম নয়, যে কোনো হোমিওপ্যাথিক ঔষধের ক্ষেত্রেই একই ফলাফাল প্রদর্শন করবে এবং হোমিওপ্যাথিক অন্য ঔষধগুলো নিয়েও একই ধরনের আরও গবেষণা প্রয়োজন এবং সেটা সময়ের দাবি।

লেখক: পিএইচডি কো-অর্ডিনেটর, ইন্টারন্যাশনাল একাডেমি অব ক্লাসিক্যাল হোমিওপ্যাথি, বাংলাদেশ।