
বাংলাদেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ নিয়ে সরকারকে সতর্ক করার পর এই বিষয়টি নিয়ে দেশজুড়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। বিষয়টি সামনে আসার পেছনে মূলত বিএনপি বা তার শীর্ষ নেতৃত্বকে রাজনীতি থেকে সরিয়ে দেওয়ার যে সম্ভাবনা রয়েছে, সেটি নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে।
ফখরুল ইসলাম বিবিসি বাংলাকে জানিয়েছেন, তিনি ‘বিরাজনীতিকরণের’ বিষয়টি নিয়ে সতর্ক করেছেন, কিন্তু সরাসরি বলেছেন না যে সরকার ‘মাইনাস-টু’র চিন্তা করছে। সরকার পক্ষ থেকে এক উপদেষ্টা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন যে, বর্তমান সরকারের এই বিষয়টি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা নেই।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেছেন, বিএনপিকে বাদ দেওয়ার প্রশ্ন আসে না এবং তারা সকলের নিয়েই রাজনীতি করতে চান। এদিকে বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনের গুরুত্ব কমিয়ে বিএনপিকে লক্ষ্য করে আসা বিভিন্ন বক্তব্যের কারণে এই আলোচনার সূত্রপাত হয়েছে।
২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ‘মাইনাস-টু ফর্মুলা’ আলোচনা শুরু হয়েছিল যখন খালেদা জিয়া এবং শেখ হাসিনাকে রাজনীতি থেকে সরানোর চেষ্টা হয়েছিল। বর্তমান পরিস্থিতিতে বিএনপি সরকারকে সতর্ক করছে যে, এর পুনরাবৃত্তি ঘটলে জনগণ তা মেনে নেবে না।
ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, "বাংলাদেশকে হাসিনামুক্ত করার জন্য আমরা কাজ করছি। দ্রুত নির্বাচন দাবি করছি," তবে সরকার বলছে, নির্বাচনের আগে সংস্কারের বিষয়টিও গুরুত্ব দিতে হবে।
সাম্প্রতিক আন্দোলনকারীরা ‘আগে সংস্কার, পরে নির্বাচন’ বলছেন। সরকারের একাধিক উপদেষ্টা বলেছেন যে ‘মাইনাস-টু’ সরকারের কোনো এজেন্ডা নয়, তবে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগের কিছু কারণ আছে।
এখন প্রশ্ন উঠছে, বিএনপি কি তাদের নেতৃত্বকে রাজনীতি থেকে সরানো নিয়ে উদ্বিগ্ন? দলের নেতাদের মতে, বিএনপি হলো বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক দল এবং তাদের বাদ দিয়ে কোনো রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়া সম্ভব নয়।
সার্বিকভাবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে ‘মাইনাস-টু’ বিষয়টি উত্থাপিত হওয়ার পেছনে রয়েছে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং রাজনৈতিক মাঠে বিএনপির অবস্থান নিয়ে উদ্বেগ। বিএনপি নিজের অবস্থান স্পষ্ট করতে চাচ্ছে এবং সরকারের কর্মকাণ্ডের দিকে নজর রাখছে। -বিবিসি বাংলার প্রতিবেদন অনুসারে।