
মাধবপুর প্রতিনিধি, হবিগঞ্জ:
সরকারি হাসপাতালের অফিস ফাঁকি দিয়ে হবিগঞ্জ শহরের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে প্রাইভেট চিকিৎসায় ব্যস্ত থাকেন ডাক্তাররা। ফলে গ্রামগঞ্জ থেকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা ভোগান্তির শিকার হন। আর এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে হাসপাতালের নিয়োজিত প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের দালালরা ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে চিকিৎসার নামে গলাকাটা ফি আদায় করছে। সম্প্রতি রোগীদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা সিভিল সার্জনের অভিযানে এসব অনিয়মের সত্যতা পাওয়া যায়।
সরকারি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ডাক্তারদের চিকিৎসা দেয়ার নিয়ম হচ্ছে সকাল ৯টা থেকে দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। কিন্তু অধিকাংশ ডাক্তারই নামে মাত্র হাসপাতালে এসে হাজিরা দিয়ে চলে যান। প্রাইভেট হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে চিকিৎসা দিতে আবার রোগীদের চাপ বাড়লে হাসপাতালে এসে চিকিৎসা করেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কতিপয় ডাক্তাররা প্রাইভেট ক্লিনিকের সাথে অলিখিত চুক্তিবদ্ধ প্রাইভেট ক্লিনিকে আসা রোগীকে বসিয়ে রেখে ক্লিনিক মালিকরা তাদের চুক্তিকৃত সদর হাসপাতালের সরকারি ডাক্তারকে ফোন করে নিয়ে যান তাদের ক্লিনিকে। ফলে একসাথে দুই স্থানে অনেকেই সহজে রোগী দেখতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত হন সদর হাসপাতালে আসা রোগীরা। সরকারি হাসপাতালে দরিদ্র মানুষের চিকিৎসা দিতে সরকার বেতন দিয়ে চিকিৎসক নিয়োগ দিলেও তারা অতিরিক্ত ইনকামের আশায় প্রাইভেট ক্লিনিকে অতিরিক্ত সময় দিচ্ছেন। হবিগঞ্জ শহরের নামিদামি শায়েস্তানগরের কয়েকটি হাসপাতালে শেখ হাসিনা মেডিকেল কলেজ ও সদর হাসপাতালের সরকারি ডাক্তারগণ চিকিৎসা দেন।
রোগীদের অভিযোগ, চিকিৎসকদেরকে সদর হাসপাতালে পাওয়া যায় না। ফলে রোগীরা বিপাকে পড়ে বাধ্য হয়ে এসব ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা করান।
বিষয়টি জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের নজরে এলে সিভিল সার্জন নুরুল হকসহ প্রশাসনের লোকজন সোমবার চাঁদের হাসি, মুন জেনারেল হাসপাতাল, মাদার কেয়ারসহ প্রাইভেট হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে এর সত্যতা পান। এ সময় সরকারি ডাক্তারদেরকে সতর্ক করা হয়। যাতে তারা পরবর্তীতে একই ভুল আর না করেন।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন নুরুল হক জানান, এসব প্রাইভেট ক্লিনিকের অভিযানে রোগীদের অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। আমাদের অভিযান নিয়মিত চলবে।