Date: April 29, 2024

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / শিক্ষাঙ্গন / ১৮ পেরিয়ে ১৯ শে পদার্পণ করলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

১৮ পেরিয়ে ১৯ শে পদার্পণ করলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

October 19, 2023 07:49:36 PM   অনলাইন ডেস্ক
১৮ পেরিয়ে ১৯ শে পদার্পণ করলো জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়

রাশেদ হোসেন রনি:
ইতিহাস-ঐতিহ্যের ধারক হিসেবে পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে চিত্তরঞ্জন এভিনিউতে ২০০৫ সালের ২০ অক্টোবর যাত্রা শুরু করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়। আজকের এই দিনে জাতীয় সংসদে গৃহীত ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় আইন’ (২৮ নং আইন) বলে জগন্নাথ কলেজ থেকে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত হয়। সাফল্য ও গৌরবের ১৮ বছর পূর্ণ হয়ে আজ ১৯ বছরে পদার্পণ করেছে দেশের স্বনামধন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়টি।

‘আঠারোতে জগন্নাথ সাহসী নির্ভীক’ স্লোগানকে সামনে রেখে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে আজ (বৃহস্পতিবার) জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস-২০২৩ তথা ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপিত হয়। যদিও ২০ অক্টোবর, ২০২৩ তারিখ ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দিবস’ উদযাপিত হওয়ার কথা কিন্তু ঐদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় একদিন পূর্বেই পালিত হয় জবি'র ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।

এই দিবসে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানসমূহের মধ্যেছিল আনন্দ র‌্যালি, প্রকাশনা উৎসব, চারুকলা প্রদর্শনী, নাটক পরিবেশনা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সকাল ৯.৩০ঘটিকায় শহিদ মিনার চত্বরে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বিশ্ববিদ্যালয়ের পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে শুরু হয় অনুষ্ঠানসূচি। অতঃপর বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের শুভ উদ্বোধন করেন উপাচার্য(রুটিন দায়িত্বপ্রাপ্ত) ও ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ।

এরপর সকাল ৯.৫০ ঘটিকায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ম্যুরালে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, রেজিস্ট্রার, চেয়ারম্যান, প্রভোস্ট, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমান ও নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী,কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ, জবি রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।  

এরপর ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ-এর নেতৃত্বে ব্যান্ডদলে সুসজ্জিত প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আনন্দ র‌্যালিটি শহিদ মিনার চত্বর হতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে রায় সাহেব বাজার মোড় ঘুরে, ভিক্টোরিয়া পার্ক পরিক্রমণ করে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে সমাপ্ত হয়। এসময় ছাত্র-ছাত্রীরা নানা রঙ-বেরঙের টি-শার্ট ও শাড়ি পরে নেচে গেয়ে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে। এছাড়া বিভিন্ন অনুষদের ডিন, ইনস্টিটিউটের পরিচালক, বিভাগীয় চেয়ারম্যানবৃন্দ, প্রভোস্ট, প্রক্টর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ কে এম লুৎফর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ, প্রতিটি বিভাগের শিক্ষক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার্স ইউনিটি কর্মকর্তা, কর্মচারীবৃন্দ, নিজস্ব বিভাগীয় ব্যানারে র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করে।  

র‌্যালি শেষে সকাল ১০:৪৫ ঘটিকায় ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী প্রকাশনা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। প্রকাশনা প্রদর্শনীতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রকাশিতগ্রন্থ, বিভিন্ন অনুষদ ও বিভাগ থেকে প্রকাশিত জার্নাল, শিক্ষকদের প্রকাশিত গ্রন্থ ও অন্যান্য মুদ্রণ উপকরণ স্থান পায়।  
এরপর সকাল ১১ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের নিচতলায় চারুকলা বিভাগের উদ্যোগে ‘ঐতিহ্য ও পরষ্পরায় আমার প্রিয় ক্যাম্পাস’ শীর্ষক বার্ষিক চারুকলা প্রদর্শনী ২০২৩ এর উদ্বোধন করেন ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ। এতে বিভাগীয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আঁকা ছবি ও অন্যান্য শিল্পকর্ম স্থান পায়। ১১.১৫ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মিলনায়তনে নাট্যকলা বিভাগের উদ্যোগে ‘নকশী কাঁথার মাঠ’ নাটকমঞ্চায়িত হয়। বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জীব কুমার দে'র নির্দেশনায় নাটকটিতে অভিনয় করেন বিভাগের ৫ম ও ৮ম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। তাছাড়া, বাঁধন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের উদ্যোগে ভাষা শহিদ রফিক ভবনের নিচতলায় দিনব্যাপী স্বেচ্ছায় রক্তদান কর্মসূচি চলে।  

সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরুর প্রারম্ভে এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. কামালউদ্দীন আহমদ বলেন, “আজকের দিনের শিক্ষার্থীদের এই উচ্ছাস-আনন্দ, অনুভূতিই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের বড় সম্পদ ও অর্জন।” তিনি বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশ গড়াই হচ্ছে বর্তমান সরকারের লক্ষ্য। আর স্মার্ট বাংলাদেশ বির্নিমানের জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সম্মুখ সারিতে থাকবে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।” তিনি আরো বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় সঠিকভাবে পরিচালনা ও উন্নয়নের জন্য সকলের ঐকান্তিক সহযোগিতা প্রয়োজন। সঠিক পদক্ষেপগ্রহণ করা হলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাস দ্রুততার সাথে শেষ করা সম্ভব, এজন্য প্রয়োজনে আমরা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ করবো।”

এছাড়াও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ শাহজাহান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ আইনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আবুল কালাম মোঃ লুৎফর রহমান, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জবি শাখার সভাপতি মোঃইব্রাহিম ফরাজী, সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন প্রমুখ বক্তব্য প্রদান করেন। 
এরপর বেলা ১২:০০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের তত্ত্বাবধানে শিক্ষার্থীবৃন্দের অংশগ্রহণে, বেলা ১.৫০ঘটিকায় শিক্ষক ও কর্মকর্তাদের অংশগ্রহণে এবং বিকাল ৩.২০ ঘটিকায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিককেন্দ্র, আবৃত্তি সংসদ ও উদীচী শিল্পীগোষ্ঠি-এর সমন্বয়ে মুজিব মঞ্চ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হয়। এরমধ্যে নৃত্য, দলীয় সংগীত, নজরুল গীতি, লোক সংগীত উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও বিশ্ব‌বিদ্যাল‌য়ের নিজস্বতাকে সব‌চে‌য়ে গুরুত্ব প্রদান করা হয় এ অনুষ্ঠানে। এ লক্ষ্যে এবার দিবসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের দ্বারা পরিচালিত ব্যান্ড ও লোক গানের ব্যান্ডদল দুপুর ২:০০ টা থেকে বিকাল পর্যন্ত ধারাবাহকিভাবে গান পরিবেশন করছে।  

তাছাড়া জবি দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ভবনসমূহ আলোক সজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। এদিকে, উক্তপ্রতিষ্ঠানের জন্য জমিদানকারী জমিদার জগন্নাথ রায় চৌধুরীর বর্তমান বংশধরেরা ট্রেজারার ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন।