
মাধবপুর সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ:
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার ধর্মঘর ইউনিয়নে অবস্থিত ধর্মঘর ডিগ্রি কলেজে গত ৩০ বছরেও নির্মাণ করা হয়নি শহীদ মিনার। ডিগ্রী কলেজের মতো একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার না থাকাটা লজ্জাজনক এ কথা স্বীকার করে কলেজটির অধ্যক্ষ আলী আসগর দাবি করেছেন আর্থিক সংকটের কারণেই শহীদ মিনার নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
জানা যায়, ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজটি কালিকাপুর গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম ১৯৯৩ সালে প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৯৯ সালে কলেজটির উচ্চ মাধ্যমিক স্তর এমপিওভুক্ত হয়। ২০১৩ সালে কলেজে মানবিক বিভাগ দিয়ে ডিগ্রী ক্লাশ চালু করা হয়। এমপিওভুক্তির ক্ষেত্রে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ডিগ্রী পর্যায়ে কমপক্ষে দুইটি বিভাগ চালুর কঠিন শর্ত দেওয়ার কারনে এবং প্রয়োজনীয় বিভাগ চালু করতে না পারায় ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজের স্নাতক পর্যায় অধ্যাবধি এমপিওভুক্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন অধ্যক্ষ আলী আসগর।
বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে মানবিক বিজ্ঞান ও বাণিজ্য বিভাগে প্রায় ১১শ’ ছাত্রছাত্রী অধ্যয়নরত রয়েছে। প্রতিবছর কলেজটি থেকে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ছাত্রছাত্রী উচ্চ মাধ্যমিক ও ডিগ্রী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে থাকে, ফলাফলও আশাব্যঞ্জক। কিন্তু কলেজটিতে একটি শহীদ মিনার না থাকার ফলে কলেজ শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ভাষা শহীদদের পুষ্পস্তবক দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
অধ্যক্ষ আলী আসগর জানান, ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজে ৩২ শতাংশ জায়গার উপর ১টি ৪ তলা ভবন ও ২ টি আধাপাকা টিনশেড ঘরে শিক্ষা কার্যক্রম চলছে। বর্তমানে ২৭ জন শিক্ষক ও ৮ জন কর্মচারী রয়েছেন। শিক্ষকদের মধ্যে ১৮ জন এমপিওভুক্ত বাকি ৯ জন খণ্ডকালীন ছাত্রদের বেতন ছাড়া কলেজর আর কোনো আয়ের উৎস নেই। কলেজের তহবিল সংকটের কারণে ইতোপূর্বে গভর্নিং বডির মিটিংগুলোতে তিনি শহীদ মিনার নির্মাণের বিষয়টি উত্থাপন করলেও লাভ হয়নি। বর্তমানে শিক্ষক কর্মচারীদের বেতনের কলেজ প্রদত্ত অংশ ২০ মাস ধরে দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। কলেজে একটি শহীদ মিনার নির্মাণ করা খুব দরকার। শহীদ মিনার না থাকা কলেজ অধ্যক্ষ হিসাবে এটা আমার জন্যও লজ্জাজনক অধ্যক্ষ। মনেপ্রাণে শহীদ মিনার নির্মাণ চান বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ধর্মঘর আমবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা ও হবিগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের সাবেক উপাধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুজ জাহের বলেন, সিলেট বিভাগের মধ্যে ইউনিয়ন পর্যায়ে শিক্ষা-দীক্ষায় ধর্মঘর অনেকদিন ধরেই শীর্ষস্থানে রয়েছে। অথচ এমন একটি এলকার একটি ডিগ্রি কলেজে ৩০ বছরেও শহীদ মিনার নির্মাণ করতে না পারাটাকে খুবই দুঃখজনক ও নিন্দনীয় বলে মন্তব্য করেন। গত আগস্ট মাসে ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজের গভর্নিং বডির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর নতুন এডহক কমিটি গঠনকল্পে ২ ফেব্রুয়ারি জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রস্তাবনা পাঠানো হলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদন পাওয়া যায়নি বলে জানা গেছে।