Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ময়মনসিংহ / ৮ বছর পর সাবেক এমপি, চেয়ারম্যানসহ ৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্র...

৮ বছর পর সাবেক এমপি, চেয়ারম্যানসহ ৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

April 27, 2025 09:07:27 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
৮ বছর পর সাবেক এমপি, চেয়ারম্যানসহ ৪৮ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

নেত্রকোনা সদর প্রতিনিধি:
নেত্রকোণার পূর্বধলায় ইটভাটা নির্মাণে বাধা, মোটা অংকের চাঁদা দাবি এবং ইট লুটের অভিযোগে প্রায় ৮ বছর পর আদালতে মামলা হয়েছে। উপজেলার মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার নামে এক ব্যবসায়ী মামলাটি দায়ের করেন।

মামলায় আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক এমপি ও পূর্বধলা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল বীর প্রতীক, সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মো. জাহিদুল ইসলাম সুজন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিক, শিক্ষক, পুলিশসহ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের ৪৮ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি আরও ৪০-৫০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।

গত মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) নেত্রকোণার দ্রুত বিচার আদালতে মামলাটি দায়ের করেন উপজেলার জারিয়া ইউনিয়নের সাবেক প্রয়াত চেয়ারম্যান আব্দুল গণি তালুকদারের ছেলে এবং মানুষউড়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার।

মামলার বিবরণে বলা হয়, ২০১৭ সালে নজরুল ইসলাম প্রায় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে মানুষউড়া গ্রামের ফজলুল হক তালুকদারের বাড়ির পাশে একটি ইটভাটা নির্মাণের প্রস্তুতি নেন। এ জন্য তিনি রাস্তার পাশে পাঁচ লক্ষ ইট মজুত করেন। খবর পেয়ে তৎকালীন এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালসহ অন্যান্য আসামিরা ইটভাটা নির্মাণে বাধা দেন। তারা দাবি করেন, ইটভাটা নির্মাণ করতে হলে ৫০ লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে সাবেক এমপি ক্ষিপ্ত হয়ে পূর্বধলা থানার পুলিশ এবং তার নিজস্ব সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে ২০১৭ সালের ২৪ অক্টোবর সকালে ইটভাটায় অভিযান চালান। এ সময় এমপি বেলালের হাতে থাকা রিভলবার এবং সন্ত্রাসী বাহিনীর রামদা, কিরিচ, ছোরা প্রদর্শন করে নজরুল ইসলাম ও তার পরিবারকে ভয়ভীতি দেখানো হয় এবং প্রায় পাঁচ লক্ষ ইট লুট করে ট্রাক ও হেনট্রলি দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। যার আনুমানিক মূল্য ৫০ লাখ টাকা।

বাদী নজরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, এ ঘটনায় সাবেক এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলাল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান জাহিদুল ইসলাম সুজন, পূর্বধলা থানার সাবেক ওসি অভিরঞ্জন দেব, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাজেদা খাতুন, এমপির ঘনিষ্ঠ সহযোগী ফেরদৌস আলম, কামরুজ্জামান উজ্জ্বল, উপজেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি মাসুদ আলম টিপু, আওয়ামী লীগ নেতা ও ঠিকাদার ওয়াসিম সিং, নূরুল আমিন, সেলিম জাহাঙ্গীর, সাংবাদিক ওয়াদুদ, যুবলীগ নেতা ইসলাম উদ্দিনসহ আরও অনেক নেতাকর্মী জড়িত ছিলেন।

তিনি জানান, তখনকার পরিস্থিতিতে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রতিবাদ বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের সাহস পাননি। একাধিকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়ে অবশেষে দীর্ঘদিন পর আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন।

এ বিষয়ে জানতে সাবেক এমপি ওয়ারেসাত হোসেন বেলালসহ অভিযুক্তদের মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাদের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। জানা গেছে, গত ৫ আগস্টের পর থেকে অভিযুক্তদের এলাকায় দেখা যাচ্ছে না। তবে সাবেক এমপি ওয়ারেসাত হোসেন দীর্ঘদিন যাবৎ মারাত্মক অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী রফিকুল ইসলাম খান জুয়েল জানান, মামলাটি দায়েরের পর বিচারক আশরাফুন্নাহার পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জকে ঘটনাটির তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

পূর্বধলা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ নূরুল আলম বলেন, মামলার বিষয়ে শুনেছেন তবে এখনো থানায় কোনো কাগজপত্র আসেনি।