
আমিনুর রহমান, আক্কেলপুর (জয়পুরহাট) সংবাদদাতা:
চলছে মধুর মাস। দেশের অন্যান্য স্থানের মতো জয়পুরহাটের আক্কেলপুর বাজারেও আম, লিচুসহ হরেক রকমের মৌসুমি ফলের দেখা মিলছে। সেই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে সুস্বাদু তালশাঁসও। প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে বাড়ছে ফলটির কদর। আক্কেলপুর পৌর শহরের অলিগলিসহ উপজেলাগুলোর বিভিন্ন বাজার এলাকার মোড়ে মোড়ে বিক্রি হচ্ছে তালশাঁস। একটি শাঁস আকারভেদে ৪-৫ টাকা এবং একটি তাল ১০-১৫ টাকা দরে বিক্রি করছে বিক্রেতারা। বিক্রেতাদের দাবি, আম ও লিচুসহ মৌসুমি অন্য ফলের ক্ষেত্রে বিষাক্ত ফরমালিন ব্যবহারের ঘটনা খুবই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে। কিন্তু তালশাঁসে এসবের প্রয়োজন হয় না। তাই ভেজালমুক্ত তালশাঁসের কদর বেশি। আক্কেলপুর কলেজ বাজার কাঁচামাল পট্টি যাবার পথে তালশাঁস বিক্রি করছিলেন ব্যবসায়ী সফিকুল ইসলাম চঞ্চল। তিনি গ্রামে গ্রামে ঘুরে তাল গাছ মালিকদের কাছ থেকে তাল সংগ্রহ করেন। পরে আক্কেলপুর পৌর কলেজ বাজারে বিক্রি করেন।
সফিকুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরই এ সময়ে আমি তালশাঁস বিক্রি করি। গরমের এ দিনেও বিক্রি হয় ভালো। দাম ভালো পাওয়া যায়। সারাদিনে দেড় থেকে দুই হাজার টাকার তালের শাঁস বিক্রি হয়। প্রায় এক হাজার টাকা মুনাফা হয়।
কথা হয় তাল বিক্রেতা মাজদার আলীর সঙ্গে। তিনি বলেন, তালগাছ থেকে ফল কেটে আনা কষ্টকর বিষয়। অতিরিক্ত পারিশ্রমিক দিয়ে কেটে আনতে হয়। একটি গাছে ৫০০-৭০০টি তাল পাওয়া যায়। জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকেই তালশাঁস বিক্রি শুরু হয়। আরও কিছুদিন চলবে। আক্কেলপুর পৌর সভার কলেজ বাজারে তালশাঁস কিনতে আসা বুলবুল আহম্মেদ বলেন, গরমের মধ্যে তৈলাক্ত খাবারের চেয়ে তালশাঁস অনেক উপকারী। এর অনেক গুণাগুণ রয়েছে। খেতেও সুস্বাদু।
আক্কেলপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোঃ এমরান হোসেন বলেন, এবছরে `শেখ রাসেল’ এর জন্মদিনে উপজেলার ৫টি ইউনিয়নের গ্রামীণ সড়কের দুধারে ১শতটি করে তাল গাছ রোপন করা হয়েছে। তালগাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো এ গাছ বজ্রনিরোধক। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার আব্দুর রহিম বলেন, চল্লিশ দিনের কর্মসূচীতে শ্রমিকদের উদ্বুদ্ধ করে উপজেলায় প্রায় ৫ হাজার তাল গাছের বীজ রোপন করা হয়েছে।
বিভিন্ন তথ্য মতে জানা যায়, তালশাঁস শরীরের জন্য খুবই উপকারী। গরমের দিনে তালশাঁসে থাকা জলীয় অংশ পানিশূন্যতা দূর করে। এছাড়া ক্যালসিয়াম, ভিটামিন এ, বি ও সি, জিংক, পটাশিয়াম, আয়রন, ক্যালশিয়ামসহ অনেক খনিজ উপাদান রয়েছে।তালে থাকা অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। কচি তালশাঁস রক্তশূন্যতা দূর করে। চোখের দৃষ্টিশক্তি ও মুখের রুচি বাড়ায়।