Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / বরিশাল / কাঁঠালিয়ায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকা...

কাঁঠালিয়ায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা

April 23, 2025 08:13:48 PM   অনলাইন ডেস্ক
কাঁঠালিয়ায় পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা

কাঁঠালিয়া সংবাদদাতা:
ঝালকাঠির কাঁঠালিয়া উপজেলার আওরাবুনিয়ায় বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে ‘পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর কারণ ও প্রতিরোধে করণীয়’ বিষয়ক সচেতনতামূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (২৩ এপ্রিল) উপজেলার ঐতিহ্যবাহী আওরাবুনিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের অডিটরিয়ামে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন শৌলজলিয়া ইউনিয়নের মনস্বিতা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এ কে এম কামরুজ্জামান। সভাপতিত্ব করেন আওরাবুনিয়া মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রী। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন বসুন্ধরা শুভসংঘের উপজেলা শাখার সভাপতি ও সাংবাদিক সাকিবুজ্জামান সবুর।

সভায় বক্তব্য রাখেন বিদ্যালয়ের সিনিয়র সহকারী শিক্ষক শ্যামলী রানী বিশ্বাস, শিক্ষক বিনয় কৃষ্ণ হাওলাদার, দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী আরিশা মেহজাবিন ও তীর্থ রায়।

প্রধান অতিথি অধ্যক্ষ এ কে এম কামরুজ্জামান বলেন, শিশুদের পানিতে ডুবে মৃত্যু প্রতিরোধে পরিবারের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি। যেসব পরিবারে ছোট শিশু রয়েছে, তাদের পুকুর-ডোবা-নালার পাশে নিরাপত্তা বেষ্টনি নির্মাণ, শিশুদের সাঁতার শেখানো, নিরাপদ খেলার স্থান নিশ্চিত করা এবং শিশু বাইরে থাকলে প্রতি মুহূর্তে নজর রাখার পরামর্শ দেন তিনি।

বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন দৈনিক কালের কণ্ঠের উপজেলা প্রতিনিধি ও দ্য হাঙ্গার প্রজেক্ট বাংলাদেশের বরিশাল অঞ্চলের কো-অর্ডিনেটর ফারুক হোসেন খান, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. মোশাররফ হোসেন এবং দৈনিক নয়া দিগন্তের উপজেলা সংবাদদাতা মো. আমিনুল ইসলাম।

বক্তারা বলেন, বাংলাদেশে শিশু মৃত্যুর একটি অন্যতম কারণ পানিতে ডুবে যাওয়া। প্রতিবছর বহু শিশু এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনার শিকার হয়, যা দেশের জনস্বাস্থ্য খাতে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় বর্ষা মৌসুমে নদী-নালা, খাল-বিল, পুকুর-ডোবা পানিতে ভরে গেলে পানিতে ডুবে মৃত্যুর হার আরও বেড়ে যায়। সচেতনতার মাধ্যমে এ মৃত্যুহার কমানো সম্ভব।

সাংবাদিক ফারুক হোসেন খান বলেন, একসময় অভিভাবকরা শিশুর কোমরে ঘণ্টা বা ঝুনঝুনি বেঁধে রাখতেন, যাতে শব্দ শুনে তাদের গতিবিধি বোঝা যেত। এখন মোবাইল ও টেলিভিশন আসক্তির কারণে অভিভাবকরা শিশুদের দিকে তেমন নজর রাখেন না, যার ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে।

শিক্ষার্থী আরিশা মেহজাবিন বলেন, বেশিরভাগ শিশুই খেলতে খেলতে পুকুর বা খালের পানিতে পড়ে মারা যায়। অভিভাবকদের নজরদারি থাকলে এ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব। শিক্ষার্থী তীর্থ রায় বলেন, পাঁচ বছর বয়স হলেই শিশুদের সাঁতার শেখানো উচিত এবং তার আগ পর্যন্ত শিশুদের সবসময় নজরদারিতে রাখতে হবে।

দৈনিক নয়া দিগন্তের উপজেলা সংবাদদাতা মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, ১-৫ বছর বয়সী শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে থাকে। বিশেষ করে দুপুরের সময়, যখন অভিভাবকরা ব্যস্ত থাকেন, তখন দুর্ঘটনার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

সভায় স্বাগত বক্তব্যে বসুন্ধরা শুভসংঘের উপজেলা সভাপতি সাকিবুজ্জামান সবুর বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের তথ্য অনুযায়ী, প্রতি বছর দেশে ১৭ হাজার মানুষ পানিতে ডুবে মারা যায়, যার ৭০ শতাংশই শিশু। বয়সভিত্তিক পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ১-৫ বছর বয়সী শিশুরাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। বর্ষা ও বন্যার সময় গ্রামীণ এলাকায় ঘরের চারপাশে পানি জমে থাকার কারণে দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়ে। দুর্ঘটনার পর দ্রুত চিকিৎসা না পাওয়ার কারণেও অনেক শিশু অকালে মৃত্যুবরণ করে। এ সমস্যা প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোই প্রধান করণীয়।

সভাপতির বক্তব্যে প্রধান শিক্ষক সুশীল চন্দ্র মিস্ত্রী বলেন, একটি শিশুর প্রাণ অমূল্য। প্রতিটি শিশুমৃত্যুই একটি পরিবারের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন চালিয়ে শিশু ও অভিভাবকদের সচেতন করে তোলার উদ্যোগ নেওয়া জরুরি।