
গাজীপুর প্রতিনিধি:
গাজীপুরে যাত্রীবাহী বাসে এক নারী যাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে বাসের হেলপার ও কন্ট্রাক্টরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) রাতে গাজীপুরের কোনাবাড়ী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী যাত্রী থানায় অভিযোগ দায়ের করলে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী থানা পুলিশ আজমেরি পরিবহনের হেলপার ও কন্ট্রাক্টরকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন গাজীপুর মহানগরের এনায়েতপুর গ্রামের মো. নাইম মিয়ার ছেলে শাহেদ আলী (১৯) ও টাঙ্গাইল জেলার ভূঞাপুর থানার পাঁচটেকি গ্রামের মো. খাইরুল ইসলামের ছেলে কামরুল ইসলাম (১৭)।
ভুক্তভোগী নারী যাত্রীর স্বজনরা জানান, নিজ গন্তব্যে পৌঁছাতে ওই নারী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যার পর ঢাকার উত্তরা-হাউজ বিল্ডিং এলাকা থেকে আজমেরি পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাসে ওঠেন। বাসটি চালাচ্ছিলেন মো. বাচ্ছু মিয়া, তার পাশে ছিলেন আরেক চালক শাকিল হোসেন। বাসটি গাজীপুরের হারিকেন এলাকায় যানজটে পড়লে দীর্ঘক্ষণ আটকে থাকে। অন্যান্য যাত্রীরা নেমে গেলেও ওই নারী ঘুমিয়ে পড়ায় বাসেই থেকে যান।
এ সময় বাসে দুই চালক, দুই হেলপার এবং একমাত্র ওই নারী যাত্রী ছিলেন। রাত নয়টার দিকে বাইমাইল এলাকায় বাসটি একটি নির্জন স্থানে থামিয়ে চালক বাচ্ছু মিয়া ও শাকিল ওই নারীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পরে গাজীপুর বাইপাস এলাকা থেকে হেলপার শাহেদ আলীকে বাস চালিয়ে চন্দ্রার দিকে নিয়ে যেতে বলা হয়। তিনি বাসটি ধীরে ধীরে চন্দ্রার দিকে নিয়ে যেতে থাকেন।
এ সময় দুই চালক ওই নারীর শরীরে স্পর্শ করলে তিনি চিৎকার করার চেষ্টা করেন। তখন তারা তার হাত থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ধারণ করে এবং পাঁচ হাজার টাকা দাবি করে। একপর্যায়ে বাস চালক বাচ্ছু মিয়া কোনাবাড়ী ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে তাকে নামিয়ে দিয়ে বাসটি নিয়ে চন্দ্রার দিকে চলে যায়।
ভুক্তভোগী নারী কোনাবাড়ীর নিজ বাসায় গিয়ে স্বজনদের বিষয়টি জানান। এরপর স্বজনরা তাকে নিয়ে রাতেই কোনাবাড়ী থানায় অভিযোগ করেন। এ ঘটনার পর স্বজনরা চন্দ্রা এলাকায় গিয়ে বাস, হেলপার ও কন্ট্রাক্টরকে শনাক্ত করে আটক করেন। স্থানীয়রা হেলপারকে গণধোলাই দিয়ে হাত-পা বেঁধে বাসের ভেতরে রাখে। খবর পেয়ে কালিয়াকৈর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আটক দুই হেলপারকে উদ্ধার করে কোনাবাড়ী থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে।
নারী যাত্রী জানান, তিনি উত্তরা হাউজ বিল্ডিং বাসস্টেশন থেকে ওই বাসে উঠে ঘুমিয়ে পড়েন। কখন সব যাত্রী নেমে গেছে, তা টের পাননি। বাসের দুই চালক তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে স্পর্শ করলে তিনি টের পান। তাদের কাছে অনুনয়-বিনয় করলেও তারা ক্ষান্ত হয়নি।
তিনি আরও জানান, তার মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়ে পাঁচ হাজার টাকা দাবি করা হয়। তিনি থানায় মামলার হুমকি দিলে তাকে কোনাবাড়ী ফ্লাইওভারের পশ্চিম পাশে নামিয়ে দিয়ে বাসটি চন্দ্রার দিকে চলে যায়।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন কোনাবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ মো. নজরুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরই অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হয়েছে। ধর্ষণচেষ্টার মামলার প্রস্তুতি চলছে।