
ভ্রাম্যমাণ প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ:
মানিকগঞ্জ সদর বাসস্ট্যান্ড ছিল এক সময় চাঁদাবাজির অভয়ারণ্য। এখন সেই এলাকাটি পরিণত হয়েছে একটি ব্যবসাবান্ধব পরিবেশে। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মতে, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যকর ভূমিকায় সদর বাসস্ট্যান্ডসহ আশপাশের পরিবহন ও ব্যবসা কেন্দ্রগুলো এখন অনেকটাই চাঁদামুক্ত।
বাসস্ট্যান্ড ঘিরে গড়ে ওঠা পরিবহন, হোটেল-রেস্তোরাঁ ও ফুটপাতের শত শত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক ও কর্মচারীরা জানাচ্ছেন, আগে আয়ের একটি বড় অংশই চাঁদা হিসেবে চলে যেত। এখন শুধুমাত্র পৌরসভার নির্ধারিত টার্মিনাল চার্জ দিলেই ব্যবসা পরিচালনা করা যাচ্ছে। এতে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছেন সবাই।
স্থানীয় ব্যবসায়ী ও হকারদের দাবি, আগের সরকার আমলে চাঁদার নামে জুলুম ছিল নিত্যদিনের ঘটনা। সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ছত্রছায়ায় একটি মহল প্রকাশ্যে চাঁদা তুলতো। আন্দোলনের মাধ্যমে সেই সময়ের অবসান হওয়ার পর পরিস্থিতির আমূল পরিবর্তন হয়েছে।
পৌর বাস টার্মিনালের ইজারাদার এবং জেলা শ্রমিক দলের সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রাজ্জাক লিটন বলেন, “বর্তমানে পরিবহন থেকে শুধুমাত্র পৌর পার্কিং চার্জ নেওয়া হচ্ছে। তবে পূর্ববর্তী সরকারের দোসররা এখনো আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
‘সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)’ এর মানিকগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম বিশ্বাস বলেন, “আফরোজা খান রিতা অত্যন্ত বিচক্ষণ ও দৃঢ়চেতা নেত্রী। তার নেতৃত্বে প্রশাসন ও রাজনৈতিক দল একসঙ্গে কাজ করায় চাঁদাবাজদের দৌরাত্ম্য থেমে গেছে।”
এ প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আফরোজা খান রিতা বলেন, “মানিকগঞ্জে চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস ও দখলবাজির কোনো স্থান নেই। পরিবহন খাতে কেউ চাঁদা দাবি করলে- তারা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন—তাদের বিরুদ্ধে আমরা কঠোর অবস্থান নেব। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠাই আমাদের রাজনীতির মূল লক্ষ্য।”
তিনি আরও বলেন, “দলীয় পরিচয়ের আড়ালে কেউ যদি অনিয়মে জড়িয়ে পড়ে, তাকে ছাড় দেওয়া হবে না। আমি সকল ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি- যদি কেউ চাঁদা দাবি করে, তা সে যেই হোক, সঙ্গে সঙ্গে তাকে আইনের হাতে তুলে দিন। আমরা পাশে থাকবো।”
পুলিশ সুপার মোসাম্মৎ ইয়াছমিন খাতুন বলেন, “মানিকগঞ্জে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় কোনো ছাড় নেই। সদর বাসস্ট্যান্ড এলাকার চাঁদাবাজদের গতিবিধি নজরে রাখা হয়েছে। কেউ চাঁদা তোলার চেষ্টা করলেই তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখতে পুলিশ প্রশাসন সর্বদা প্রস্তুত।”