
ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা:
শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ছাইদুজ্জামানের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাত, জাতীয় পতাকার অবমাননা, ১৫ আগষ্ট পালন করাকে বেদাত বলে সরকারি নির্দেশনা অমান্য করাসহ নানাবিধ অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। সেইসাথে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাও দায়ের করা হয়েছে। তিনি উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া কমিউনিটি (নব) স:প্রা: বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফেরদৌসী বেগম স্বাক্ষরিত পত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন অভিযোগের বিষয়ে আনিত অভিযোগ প্রাথমিক ভাবে প্রমাণিত হওয়ায় সরকারি চাকুরি আইন-২০১৮ সনের ৩৯(১) উপ-ধারা অনুযায়ী তাকে গত ৩০ আগষ্ট সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সুত্রে জানা গেছে, উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীদের পক্ষ থেকে ওই বিদ্যালয়ের জমিদাতা সদস্য ইদ্রিস আলী বাদী হয়ে বিভিন্ন বিষয়ে বিভাগীয় উপ-পরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, ময়মনসিংহ বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারদ্বয় তদন্তে সত্যতা পান যে, ওই শিক্ষক সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্বেও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালন করেননি। এমনকি ওইদিন জাতীয় পতাকা উত্তোলনের পর ফ্লাগ রুলস এর ব্যতয় ঘটিয়ে রাতেও পতাকা উত্তোলন করে রাখেন। তাছাড়াও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মাঝে পুরস্কার প্রদানের নামে প্রহসনমূলক আচরণ করাসহ জাতির জনকের ৪৭তম শাহাদত বার্ষিকী পালন বিষয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসীর মাঝে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
তদন্তে অভিযোগগুলোর সত্যতা প্রাথমিক ভাবে প্রমানিত হওয়ায় জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস ৩৮.০১.৮৯০০.০০০.০৪.০০৫.২০-৭৯১(৭) স্মারকমুলে সরকারি চাকুরি আইন-২০১৮ সনের ৩৯(১) উপ-ধারা অনুযায়ী গত ৩১ আগষ্ট/২২ইং তারিখ থেকে তাকে সরকারি চাকুরী থেকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করেন। তবে তিনি সাময়িক বরখাস্ত থাকাকালীন সরকারী বিধি মোতাবেক খোরাকী ভাতা পাবেন।
এ ব্যাপারে বানিয়াপাড়া কমিউনিটি (নব) স:প্রা: বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ছাইদুজ্জামানের কাছে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে সাংবাদিকদের সাথেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করেন। সেইসাথে তিনি এও বলেন যে আপনাদের কাছে কোন জবাব দেবনা, আমার যা বলার তা হাইকোর্টে বলব।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মো. নুরুন নবী বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বিষয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়ের করা হয়েছে।