
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টাঙ্গাইলে হেযবুত তওহীদের আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ ২৩ রমজান সোমবার (২৪ মার্চ) টাঙ্গাইল ক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে টাঙ্গাইল জেলা হেযবুত তওহীদ। পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইফতারপূর্ব আলোচনা সভা।
আলোচনা সভায় টাঙ্গাইল জেলা সাধারন সম্পাদক মামুন পারভেজের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ বিভাগীয় সভাপতি এনামুল হক বাপ্পা। বিশেষ অতিথি ছিলেন টাঙ্গাইল জেলা দপ্তর সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম নাফে, রাজনৈতিক সম্পাদক ওমর আলী খান, টাঙ্গাইল সদর সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিব, মধুপুর উপজেলা সভাপতি মিনহাজ উদ্দিন, মির্জাপুর উপজেলা সভাপতি হুমায়ুন কবির,আলমগীর হোসেন। আলোচনা সভা ও ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন মোস্তাফিজুর রহমান টিটু।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে বর্তমান বিশ্বে মুসলমানদের উপর নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন। বিশেষ করে ফিলিস্তিনিদের উপর দখলদার ইসরায়েলের অব্যাহত হামলা ও নির্যাতনের বিষয়ে তুলে ধরে এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি। এছাড়াও বক্তব্যে সওমের উদ্দেশ্য, শিক্ষা এবং দেশ ও সমগ্র বিশ্ব জুড়ে বিদ্যমান সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক সংকটময় পরিস্থিতি, মুসলমানদের দুর্দশা এবং এ থেকে উত্তরণের পথ নিয়ে আলোচনা করেন। বিশ্বজুড়ে মানব সমাজে অশান্তি, অবরাধপ্রবণতা বৃদ্ধি, যুদ্ধ, রক্তপাত, বিদেশিদের আগ্রাসন বন্ধে মানবজাতিকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।অপরদিকে বাংলাদেশে চলমান অন্যায়, নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন সহ নানা রকমের অপরাধ বৃদ্ধির চিত্র তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, “পশ্চিমাদের শেখানো এই অপরাজনীতি ও ধাপ্পাবাজির মাধ্যমে আমাদের সমাজে সরল মানুষ ধূর্ত হয়ে যাচ্ছে, ভদ্র ঘরের ছেলেরা সন্ত্রাসীর খাতায় নাম লেখাচ্ছে, কিশোর গ্যাং তৈরি হচ্ছে। শিক্ষিতরা দুর্নীতিবাজ হয়ে উঠছে, এবং যারা ভালো থাকতে চায়, তারা খারাপের ভিড়ে হারিয়ে যাচ্ছে।সওমের উদ্দেশ্য ও শিক্ষা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সওম শব্দের অর্থ আত্মসংযম, নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করা, বিরত থাকা। রোযা তথা সওমের উদ্দেশ্য এই যে, মোমেন ব্যক্তি সারাদিন পানাহার ও জৈবিক চাহিদা পূরণ থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন, নিজের আত্মাকে শক্তিশালী করবেন। তিনি অপচয় করবেন না, পশুর ন্যায় উদরপূর্তি করবেন না। তিনি হবেন নিয়ন্ত্রিত, আত্মত্যাগী। বঞ্চিত, ক্ষুধার্ত, দরিদ্র মানুষের দুঃখ অনুভব করে তিনি তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দেবেন। আজ সওমকে ব্যবসায়ের হাতিয়ারে পরিণত করা হয়েছে। এ জাতীয় ধর্মব্যবসা ঢাকার জন্য আত্মপ্রচারের আশায় কিছু দান-খয়রাত করতে দেখা যায় মাত্র। সত্য-মিথ্যা, ন্যায়-অন্যায়ের বোধ অর্থাৎ তাকওয়া সৃষ্টি করতে ব্যর্থ আজ।
তিনি বলেন, আমাদের মূল বক্তব্য হচ্ছে- আজকে পৃথিবীময় ১৬০ কোটি মুসলিম। তাদের হাতে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ। তাদের নামাজ-রোজা ইত্যাদি আমলে কোনো ঘাটতি নেই। অথচ মুসলিম জাতি গত কয়েকশ বছর ধরে লাঞ্ছনাময় জীবনযাপন করছে। যাদের দায়িত্ব ছিল সারা পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা তারা এখন সবচেয়ে বেশি অশান্তিতে নিপতিত। এই দুর্দশা ঘোচাতে হলে আজকের মুসলিম জাতিকে সর্বপ্রথম তওহীদ অর্থাৎ আল্লাহর হুকুম তথা ন্যায়-সত্য আর হকের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যায়, অবিচার, মিথ্যা, দালালাতের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য জেহাদ অর্থাৎ আপ্রাণ প্রচেষ্টা করতে হবে। অর্থাৎ প্রকৃত মোমেন হতে হবে। রাজনৈতিক দল, ফেরকা, মাজহাব ইত্যাদি যাবতীয় অনৈক্য ঘুচিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে আল্লাহর দীন প্রতিষ্ঠা করে দুনিয়াময় শান্তি সুবিচার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আর হেযবুত তওহীদ সেই ঐক্যের ডাকই দিয়ে যাচ্ছে।
সভায় হেযবুত তওহীদের স্থানীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্খীরা উপস্থিত ছিলেন।