
দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি:
কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে রাতের আঁধারে চলছে জমজমাট অবৈধ মাটি ব্যবসা। প্রশাসনের নীরবতার সুযোগ নিয়ে স্থানীয় চক্র দীর্ঘদিন ধরে তিন ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছে বিভিন্ন ইটভাটায়। এতে একদিকে ফসলি জমি ধ্বংস হচ্ছে, অন্যদিকে অতিরিক্ত ওজনের ড্রাম ট্রাকের কারণে গ্রামের পাকা সড়কও দ্রুত নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বাড়লেও প্রশাসনের কার্যকর পদক্ষেপের অভাব স্পষ্ট।
অভিযোগ রয়েছে, উপজেলার রিফাইতপুর ইউনিয়নের দিঘলকান্দি গ্রামের মতিয়ার রহমান নামে এক ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে প্রভাব খাটিয়ে পুকুর খননের নামে ফসলি জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন। অভিযোগ আরও রয়েছে, এই অবৈধ ব্যবসার বৈধতা পেতে তিনি বিভিন্ন দপ্তরে সুবিধা দিয়ে যাচ্ছেন। ফলে বছরের পর বছর প্রশাসনের চোখের সামনেই তার এই কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
স্থানীয় এক বাসিন্দা জানান, সম্প্রতি গলাকাটি এলাকা থেকে থানা বাজার পর্যন্ত কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত একটি নতুন সড়ক কয়েক জায়গায় ফাটল ধরেছে, পিচ উঠে গেছে। এলাকাবাসীর দাবি, এই ক্ষতির পেছনে প্রধান কারণ মাটি পরিবহনের জন্য ব্যবহৃত ভারী ড্রাম ট্রাক।
এলাকাবাসীর দাবি, প্রশাসন যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে ফসলি জমি নষ্টের পাশাপাশি গ্রামীণ অবকাঠামোরও ব্যাপক ক্ষতি হবে। কিন্তু প্রতিবাদ করতে গেলেই মিথ্যা মামলায় হয়রানির শিকার হতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে উপজেলা এলজিইডির প্রকৌশলী শামিম রহমান জানান, গ্রামীণ সড়কের ধারণক্ষমতা থাকে ১০ থেকে ১২ টন। সেখানে ৫০ টনের অধিক ভারী যান চলাচল করায় রাস্তা টিকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না।
তবে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমেদ দাবি করেন, মাছ চাষের জন্য পুকুরের কাদা মাটি তোলার অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু তা বিক্রির বিষয়ে তারা কিছু জানেন না।
এ বিষয়ে জানতে মতিয়ার রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আব্দুল হাই সিদ্দিকী জানান, মতিয়ার রহমানকে কয়েকবার সতর্ক করা হয়েছে। কিন্তু তিনি অবৈধভাবে মাটি বিক্রি চালিয়ে গেলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পাশাপাশি তিনি স্থানীয়দের অনুরোধ করেন, রাতের বেলায় মাটি পরিবহন দেখলে গ্রামবাসী যেন প্রতিরোধ গড়ে তুলে ড্রাম ট্রাক আটকে দেয়।