
কুমিল্লার মুরাদনগরের আন্দিকোট ইউনিয়ন বিএনপির জনসভা রূপ নেয় জনসমুদ্রে। দীর্ঘ এক যুগেরও বেশি সময় পর এলাকায় ফিরে সাবেক পাঁচবারের সংসদ সদস্য, সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসেন কায়কোবাদকে একনজর দেখতে হায়দারাবাদ শামসুল হক স্কুল মাঠে জনতার ঢল নামে।
শনিবার বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠিত এ জনসভায় প্রধান অতিথির আসন গ্রহণ করেন কায়কোবাদ। তাকে দেখেই স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সমাবেশস্থল। নারী-পুরুষ, তরুণ, হিন্দু ধর্মাবলম্বী, আলেম-ওলামাসহ সর্বস্তরের মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কায়কোবাদ বলেন, ‘আমি নেতা নয়, আপনাদের কামলা হয়ে থাকতে চাই। ১৯৮৬ সাল থেকে এই এলাকার মানুষের জন্য কাজ করছি। আপনারা আমাকে পাঁচবার সংসদ সদস্য বানিয়েছেন, আমি কৃতজ্ঞ। আপনাদের ঋণ কোনোদিন শোধ করতে পারব না।’
তিনি বলেন, ‘যারা এনসিপি নামক নতুন দল করেছে, তারা যদি সুষ্ঠু নির্বাচন চায়, আমি তাদের স্টেজে জায়গা করে দিতে রাজি। কিন্তু এখন তারা আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে। ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের অনুসারীরা আমাকে ব্রিকফিল্ডে পোড়াতে চেয়েছিল, আর এখন তারা একসঙ্গে জোট বেঁধেছে। তবে মনে রাখবেন, যাকে আল্লাহ রক্ষা করেন, তাকে কেউ রুখতে পারে না।’
ড. ইউনূসকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনি আমাদের গর্ব। ছাত্রদের পড়াশোনা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিন। ছাত্ররা আমাদের মাথার তাজ, কিছু নামধারী ছাত্র আজ সমাজ কলুষিত করতে চাইছে।’
এ সময় কায়কোবাদ মুরাদনগরের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়েও কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘কুমিল্লার এসপি আওয়ামী লীগকে সহায়তা করছেন। মাসুদ নামের এক যুবক, যে জেলে থাকাকালীন তার মা মারা গেছে, তাকেও হয়রানি করা হচ্ছে। এসপির পূর্বেকার কর্মকাণ্ডও আমাদের জানা আছে। মুরাদনগরের ওসিকে বদলি করা হয়েছে, তাকেও এখান থেকে চলে যেতে হবে।’
জনসভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাক মিয়া, কুমিল্লা উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আখতারুজ্জামান সরকার, যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দ তৌফিক আহমেদ মীর, জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব হাজী মামুন।
সভায় সভাপতিত্ব করেন মুরাদনগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মহিউদ্দিন অঞ্জন। আরও বক্তব্য রাখেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. শাহাজান, আলহাজ্ব শামসুল হকের সহধর্মিণী বেগম জাহানারা হক, উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।