Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / পাওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় হামলা, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ভ্যানচালক রফিকুল - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রক...

পাওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় হামলা, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ভ্যানচালক রফিকুল

April 23, 2025 07:49:29 PM   স্টাফ রিপোর্টার
পাওয়া টাকা ফেরত চাওয়ায় হামলা, মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছেন ভ্যানচালক রফিকুল

শরীয়তপুরের ডামুড্যায় পাওনা টাকা ফেরত চাওয়াকে কেন্দ্র করে ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম ও তার পরিবারকে পিটিয়ে গুরুতর জখম করার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর পরিবার ডামুড্যা থানায় অভিযোগ করলেও একমাস পেরিয়ে গেলেও এখনও স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে পারেননি আহত রফিকুল। এখনো তিনি কাউকে চিনতে পারেন না, কথাও বলতে পারেন না।

গত ৩১ মার্চ সকালে ডামুড্যা উপজেলার কনেশ্বর ইউনিয়নের সুতল কাঠি গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় গুরুতর আহত হন রফিকুল ইসলাম (২৫) ও তার বাবা ইয়াছিন মাল (৪৮)। আহত হন রফিকুলের স্ত্রীও। ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে ৭ জনকে আসামি করে ডামুড্যা থানায় অভিযোগ করা হয়।

আসামিরা হলেন: নিজামুদ্দিন চৌকিদার (৫২), আজিজুল চৌকিদার (২০), রোজিনা আক্তার (৩৫), মঙ্গল চৌকিদার (৬০), মাকসুদা বেগম (৪৫), মাহিনুর বেগম (২০), ও কহিনুর বেগম (১৯)।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুই বছর আগে ব্র্যাক এনজিও থেকে নিজামুদ্দিনের জন্য নিজে জামিনদার হয়ে ৪০ হাজার টাকা লোন তুলে দেন রফিকুল। এরপর নিজাম ও তার পরিবার ঢাকায় চলে গেলে ঋণ পরিশোধের চাপ পড়ে রফিকুলের ওপর। ঈদের দিন নিজাম গ্রামে ফিরে এলে মসজিদের পাশে তাদের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে বাড়ি ফেরার পথে রফিকুল ও তার পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা চালায় অভিযুক্তরা। একপর্যায়ে রফিকুলের মাথায় আঘাত করলে তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন।

প্রথমে তাকে ডামুড্যা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে এবং শেষে ঢাকা মেডিকেলে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকরা জানান, মাথায় চারটি হাড় ভেঙে গেছে এবং দ্রুত অস্ত্রোপচার করা হয়। কিন্তু এক মাস পার হলেও রফিকুলের জ্ঞান ফেরেনি, পাশাপাশি একটি হাত ও একটি পা অচল হয়ে গেছে।

আহত রফিকুলের স্ত্রী লিজা আক্তার জানান, "আমার স্বামীকে অন্যায়ভাবে পিটিয়ে আজ তাকে অচল করে দেওয়া হয়েছে। পরিবার নিঃস্ব হয়ে গেছে। চিকিৎসা খরচ, ঔষধ কেনার টাকা নেই, না পারছি সংসার চালাতে। বিচার চাই।"

এদিকে মামলার বাদী ইয়াছিন মাল অভিযোগ করেন, "ওসি প্রথমে মামলা নিতে চাননি, কয়েকদিন ঘোরানোর পর মামলা রেকর্ড করা হয়, সেটাও দুর্বলভাবে। ফলে আসামিরা সহজেই জামিনে বের হয়ে গেছে এবং আমাদের হুমকি দিচ্ছে।"

ডামুড্যা থানার ওসি হাফিজুর রহমান মানিক জানান, "মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ৮ আসামির মধ্যে ৬ জন কোর্ট থেকে জামিনে রয়েছে, ২ জন পলাতক। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে, তদন্তের পর আদালতে রিপোর্ট দাখিল করা হবে।"

ভ্যানচালক রফিকুল ইসলাম এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন, আর তার পরিবার চরম অসহায়ত্বে দিন কাটাচ্ছে। মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে প্রয়োজন তাদের পাশে দাঁড়ানো এবং ঘটনার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত করা।