
পাংশা (রাজবাড়ি) প্রতিনিধি:
কয়েক দিনের টানা বর্ষনে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে রাজবাড়ির পাংশা পৌরসভা-বাসী। পৌর এলাকার বিভিন্ন মহল্লার রাস্তা এখন পানির নিচে। মানুষের উঠানে ও ঘরের মধ্যে জলরাশির ছড়াছড়ি।
জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার সারাদিন ধরেই বৃষ্টি হয়েছে। তবে সকালের দু’ঘন্টা ভারি বৃষ্টিতেই তেলিয়ে গেছে পৌরসভার মাঠ। পৌর ভবনের বারান্দা পর্যন্ত পানি উঠে গেছে। একদিন পেড়িয়ে গেলেও নামে নি পানি। এতে ভোগান্তিতে পরেছে পৌরসভায় সেবা নিতে আসা নাগরিকেরা। তবে পানি অপসারণে পৌর কর্তৃপক্ষ কাজ করছে বলে জানা যায়।
এদিকে পৌরসভার বয়স্ত ভাতা, বিধবা ভাতাসহ সকল ভাতাভোগীর তথ্য হালনাগাদ চলছে। অনেক বয়স্ক মানুষ আসছে। এই পানি পাড়ি দিয়ে পৌর ভবনে প্রবেশ করতে তাদের অনেক ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে। একটু বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যায় এবং ময়লা আবর্জনার কারণে কিছু কিছু সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
গতকাল পৌর এলাকার বিভিন্ন স্থানে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভাধীন মৈশালা ঋষিপাড়া (মাগুড়াডাঙ্গী দক্ষিণপাড়া মুখি রাস্তা), পৌর পিছন গেটের রাস্তা, কুড়াপাড়ার রাস্তা, দত্বপাড়ার রাস্তা পানির নিচে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও এসকল এলাকার অনেক বাড়ির ভিতরে, উঠানে ও রুমের মধ্যে জমে রয়েছে পানি। এক ঘন্টার ভাড়ি বৃষ্টিতেই কিছু কিছু এলাকায় দীর্ঘদিন পানি জমে থাকে। যে কারনে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পৌরসভার বাসিন্দাদের।
নারায়নপুর এলাকার বাসিন্দা খন্দকার আরিফুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, পৌর কর্তৃপক্ষ ভ্যাট, ট্যাক্স নেয় নিয়মিত, কিন্তু সেবা দেবার বেলায় নেই। নেই কোন কার্যকর ড্রেনেজ ব্যাবস্থা। আমরা এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চাই। আর একজন বলেন, এটা নাকি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা, এই তার নমুনা। খোদ পৌর ভবন চত্বরই পানির নিচে। পৌরসভার কাছে আমরা সঠিক সেবা চাই।
শহিদুল নামে এক বাসিন্দা বলেন, আমাদের ঋষিপাড়ার এই রাস্তাটি ভেঙ্গে বিভিন্ন স্থানে গর্ত তৈরি হয়েছে। এক ঘন্টা বৃষ্টি হলেই আমাদের এই রাস্তায় যে পানি জমে তা দীর্ঘ এক মাসেও শুকায় না। পানি বের হবার কোন রাস্তা নেই, এই বিষয়ে পৌর মেয়র ও কাউন্সিলরকে একাধিকবার বলা হলেও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা তার নেয়নি। পৌরবাসীর এ সকল সমস্যা সমাধানে পৌর কর্তৃপক্ষের কোন নজর নেই। নামেই মাত্র ‘ক’ শ্রেণি পৌরসভা। বাস্তবে কোন মিল নেই।
আনিছুর রহমান নামের এক পৌর নাগরিক বলেন, এই সমস্য দীর্ঘদিনের। শুধু পৌরসভা বা পিছনে নয়। পৌরসভার বিভিন্ন সড়কেও পানি বেধে থাকে। কিছু কিছু জায়গায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা থাকলেও তা ভরাট হয়ে গেছে। ফলে ড্রেনগুলো আর কাজে আসছে না। এগুলো পুর্নরায় সংস্কার ও পরিস্কার করা অতিপ্রয়োজন।
বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, জুতসই ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে পৌরসভার প্রতিটি এলাকায় ড্রেনেজ ব্যাবিস্থা নিশ্চিত করতে হবে এবং পুরাতন ড্রেনগুলো সংস্কার ও পরিস্কার করতে হবে। দ্রুত সুন্দর ড্রেনেজ ব্যাবস্থা নিশ্চিত করে পানি নিস্কাশনের মাধ্যমেই পৌর-বাসীদেরকে এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দেয়া সম্ভব বলেই মনে করেন তারা।
পৌর মেয়র ওয়াজেদ আলী মণ্ডল বলেন, পৌরসভার ড্রেন ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে পানি বেধে গেছে। ড্রেন পরিস্কারের কাজ চলছে। আশা করি অতি দ্রুত পানি নিস্কাশন হবে।