
শাহ সুলতান আহম্মেদ:
জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলা আওলাই ইউনিয়নের ভারাহুত শিরট্টি উচ্চ বিদ্যালয়ের অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত। বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আয়োজনে বৃহস্পতিবার দুপুরে বিদ্যালয় চত্ত্বরে এই মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধন চলাকালে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন ১০ম শ্রেণীর ছাত্রী রাবিনা আক্তার, তানজিলা, ছাত্র মোস্তাফিজুর রহমান, রিদয়, রবিউল ও সোহান প্রমুখ।
শিক্ষার্থী বক্তারা বলেন, বিদ্যালয়ের সুনামধন্য শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম। আমরা দীর্ঘদিন থেকে বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছি, আমাদেরকে কখনও শিক্ষক কোন কু-প্রস্তাব বা খারাপ ব্যবহার করেননি। আমাদের পূর্বে যারা এই বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছে, তাদের মধ্যেও কেউ কোনদিন তার নিকট থেকে এই ধরনের ব্যবহার বা আচরণের শিকার হয়নি। তার ব্যাপারে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট এবং ষড়যন্ত্রমূলক। শুধুমাত্র ৭ম শ্রেণি থেকে ৪ জন ছাত্রী এই অভিযোগ করেছে। এরমধ্যে রয়েছে গ্রাম পুলিশ হায়বরের মেয়ে। হায়বরের সঙ্গে শিক্ষক জাহাঙ্গীরের বনিবনা ছিল না। এই কারণেই আমাদের শিক্ষককে গ্রাম পুলিশ হায়বর, তার মেয়ে ও মেয়ের বান্ধবীদের দিয়ে মিথ্যা অভিযোগ করে ফাঁসিয়ে দিয়েছে।
ছাত্রীরা আরও বলেন, গত বছর করোনাকালীন সময় কোন ক্লাস হয়নি। এই ছাত্রীরা কেবলমাত্র ছয় মাস ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছে। স্যার আমাদেরকে কোনদিন কিছু বলে নাই। মাত্র ছয় মাস ক্লাস করা ছাত্রীকে স্যার কিছু বলবে এটা আমরা বিশ্বাস করি না। স্যারের নিঃশর্ত মুক্তি চাই!
শিরট্টি বাজারের স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীবৃন্দ সাংবাদিকদের বলেন, জাহাঙ্গীরের বিষয়ে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। জাহাঙ্গীর ভালো ছেলে। আমরা তার বিষয়ে কোনদিন খারাপ কথা শুনিনি। সে স্থানীয় জামে মসজিদের সম্পাদক হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন। তাকে ষড়যন্ত্রভাবে ফাঁসিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগকারী ছাত্রীর বাবা গ্রাম পুলিশ হায়বরের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত করার বিষয়টি আমাকে জানালে আমি আমার মেয়েকে প্রধান শিক্ষককে জানানোর কথা বলি। আমার মেয়ে প্রধান শিক্ষককে জানালে তিনি বলেন অবিভাবককে বলার দরকার নাই, বিষয়টি আমরা দেখবো। কয়েকদিন পার হলেও ব্যবস্থা না নেওয়ায় আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা স্যারকে জানাই। স্যার আমাকে একটি অভিযোগ দেওয়ার কথা বলে, আমি স্যারকে অভিযোগ না দিয়ে সরাসরি থানায় অভিযোগ দিয়েছিলাম।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা নাজমা আক্তার বলেন, যারা অভিযোগ করেছেন, তারা আমাদেরকে কোন বিষয় জানায়নি। অন্য মাধ্যম দিয়ে জানতে পেরে জরুরীভাবে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কথা বলে গত সোমবার বিদ্যালয়ে মিটিং ডাকি। সেই মিটিং চলাকালীন সময় আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা বিদ্যালয়ে হাজির হয়ে শিক্ষক জাহাঙ্গীরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে যায়। পরে গ্রেফতার দেখিয়ে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে আমার শুনেছি। তবে আমি একজন নারী প্রধান শিক্ষিকা হয়ে বলতে পারি জাহাঙ্গীর একজন ভালো ছেলে। অন্যান্য নারী শিক্ষিকারাও তাকে ভালো হিসেবে জানেন।