
যশোরের বেনাপোল পৌর কৃষক দলের সভাপতি ও বেনাপোল চেকপোস্ট ব্যবসায়ীদের সাধারণ সম্পাদক মো. জসিম উদ্দীনের বিরুদ্ধে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেছেন যশোর পৌরসভার শংকরপুর ইসহাক সড়কের বাসিন্দা এক ভুক্তভোগী নারী। জসিম বেনাপোল পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের সাদিপুর গ্রামের মোশারফ বিশ্বাসের ছেলে।
গতকাল শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) রাতে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানায় এই মামলা দায়ের করেন। বাদীর টাইপকৃত স্বাক্ষরিত এজাহার গ্রহণ পূর্বক ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন (সংশোধনী ২০২৩) এর ধারা অনুযায়ী মামলা রুজু করা হয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় পাঁচ মাস আগে ফেসবুকে জসিমের সঙ্গে ওই নারীর পরিচয় হয়। একপর্যায়ে সম্পর্ক প্রেমে রূপ নেয় এবং জসিম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে রাজি হন ওই নারী। পরবর্তীতে জসিম বেনাপোলের ডায়মন্ড হোটেল এবং ঝিনাইদহে তার খালার বাড়িতে নিয়ে ভুক্তভোগীর সঙ্গে একাধিকবার শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। সর্বশেষ গত ২০ এপ্রিল যশোর শহরের হোটেল শাহনাজে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন জসিম। পরে তিনি জানিয়ে দেন, বিয়ে করবেন না এবং টালবাহানা শুরু করেন। গত ২৩ এপ্রিল শহরের আইনজীবী সমিতি এলাকায় সাক্ষাৎকালে জসিম একই কথা জানান এবং ওই নারীকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে বলেন, ‘আমার ক্ষমতা সম্পর্কে তোর কোনো ধারণা নেই, ফোন করলে তোর কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।’ এরপরও ভুক্তভোগী নারী জসিমকে বিয়ের জন্য চাপ দিলেও জসিম রাজি হননি। বাধ্য হয়ে তিনি কোতোয়ালি থানায় মামলা দায়ের করেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বেনাপোল চেকপোস্ট এলাকায় কৃষক দলের নেতা পরিচয়ে জসিম ইমিগ্রেশন সিন্ডিকেট ও মানবপাচার ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। স্থানীয়রা জানান, ৫ আগস্টের পর তিনি দলের নাম ভাঙিয়ে কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন এবং টাকার প্রভাব বিস্তার করে বেনাপোল চেকপোস্ট বাজার ব্যবসায়ীদের সাধারণ সম্পাদক পদ দখল করেছেন।
এ বিষয়ে ধর্ষণ মামলার আসামি জসিম উদ্দীনের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও নম্বর বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
যশোর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, বৃহস্পতিবার (২৫ এপ্রিল) সকাল ১০টায় ভুক্তভোগী নারী নিজে বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামি জসিম পলাতক রয়েছেন। তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।