
ঢাকা থেকে দাদা বাড়ি বরিশালের গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামে বেড়াতে এসে নির্মমভাবে নিহত হয়েছে শিশু সাফওয়ান (৬)। জমি-জমা সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা।
শুক্রবার সাফওয়ানের বাবা মো. ইমরান সিকদার বাদি হয়ে গৌরনদী মডেল থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামাসহ মোট ৯ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। পুলিশ অভিযান চালিয়ে এজাহারভুক্ত চার আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে।
বুধবার দুপুর ২টার দিকে স্থানীয় বাচ্চাদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় শিশু সাফওয়ান। অনেক খোঁজাখুঁজির পরও তাকে পাওয়া না গেলে তার দাদা বারেক সিকদার গৌরনদী মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। পরদিন বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজ শেষে স্থানীয় মুসল্লিরা মান্না বেপারীর বাড়ির পেছনের ডোবায় সাফওয়ানের লাশ দেখতে পান। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়।
গৌরনদী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ইউনুস মিয়ার দিকনির্দেশনায় পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাহাবুবুর রহমানের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে রোমান চৌধুরী, মোজাম্মেল হক চৌধুরী, রাবিনা আক্তার ও আমিনা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের আদালতে উপস্থাপন করে বরিশাল কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার আসরের নামাজ শেষে নিহত সাফওয়ানের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে বিক্ষুব্ধ জনতা দুই আসামির বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট এবং দুটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দুই ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।
স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে আসামি রোমান চৌধুরী এবং মোজাম্মেল হক চৌধুরীর পরিবারের সদস্যরা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। এজন্য অগ্নিকাণ্ডে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
গৌরনদী মডেল থানার ওসি জানিয়েছেন, এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনতে পুলিশ তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। হত্যার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটন করে দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
নিহত শিশু সাফওয়ান গৌরনদী উপজেলার মধ্য হোসনাবাদ গ্রামের মো. ইমরান সিকদারের ছেলে। হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দ্রুত শাস্তি নিশ্চিতের দাবিতে এলাকাবাসীর মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।