
রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি:
ঠাকুরগাঁও পৌরশহরের মার্কাজ মসজিদ সংলগ্ন একটি বহুতল ভবনে আওয়ামী লীগ নেতা নুরুল হক জুয়েল (৫৬) অবস্থান করছেন- এমন খবরে স্থানীয়রা ভবনটি ঘেরাও করে রাখেন। এ সময় আ.লীগ নেতাকে খুঁজে বের করতে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করা নিয়ে ওয়ার্ড ও পৌর যুবদলের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।
মঙ্গলবার (৪ মার্চ) বিকেলে পৌর শহরের মার্কাজ মসজিদ সংলগ্ন (জেলা কারাগারের পেছনে) আ.লীগ নেতার নিজস্ব বাসভবনে এ ঘটনা ঘটে। তবে ওই আ.লীগ নেতাকে পাওয়া যায়নি।
জানা গেছে, বিকেলে সাড়ে ৩টার দিকে সাবেক পানিসম্পদ মন্ত্রী ও ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেনের ব্যক্তিগত সহকারী ও জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক নুরুল হক জুয়েল (৫৬) বাজার করে তার মার্কাজ মসজিদ সংলগ্ন বাড়িতে প্রবেশ করেন। এ সময় এলাকাবাসী দেখতে পেয়ে বাড়িটি ঘেরাও করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে খোঁজাখোঁজি করে তাকে না পেয়ে ফিরে আসে। তবে এলাকাবাসীর দাবি- আ.লীগ নেতা জুয়েল বাড়ির ভেতরেই আছেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে যুবদলের নেতাকর্মীরাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। আরেক দল বাইরে অবস্থান করছিল। প্রায় দেড় ঘণ্টা তল্লাশি চলে।
বিকেলে ৫টার দিকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মার্কাজ মসজিদ সংলগ্ন একটি বহুতল ভবন ঘিরে রেখেছে এলাকাবাসী। তাদের দাবি- সাবেক এমপি রমেশ চন্দ্র সেনের পিএ জুয়েল ওই ভবনে লুকিয়ে আছেন। পুলিশকে খবর দেওয়া হলে পুলিশ বাড়িটি তল্লাশি শুরু করে। এ সময় যুবদলের কিছু নেতাকর্মী বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলে কিছু নেতাকর্মী প্রবেশ করতে না দেওয়ায় তাদের দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়। পরে উপস্থিত জনতা তাদের শান্ত করে।
দেড় ঘণ্টা ধরে বাড়ির ভেতরে পুলিশ ও বিএনপির লোকজন কী করছিল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে স্থানীয়রা। নুরুল হক জুয়েল সদর উপজেলার রুহিয়া ইউনিয়নের কানিকশালগাঁও এলাকার মৃত ফজলুল করিমের ছেলে।
পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম বলেন, “আমি খবর পেয়েছি, আমার ওয়ার্ডে রমেশ চন্দ্র সেনের পিএ জুয়েলকে নাকি আটকে রাখা হয়েছে। আমি বাড়ির ভেতরে ঢুকতে চাইলে তারা আমাকে ঢুকতে দেয়নি। বাড়ির ভেতরে ২ ঘণ্টা থাকার পর বলছে, এখন নাকি আওয়ামী লীগ নেতা জুয়েল নেই। অথচ যুবদলের নেতাকর্মীরাই প্রথমে বলেছিল, ভেতরে জুয়েল আছেন। আমি ৮নং ওয়ার্ড যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পরিচয় দেওয়ার পরও আমাকে ভেতরে ঢুকতে দেয়নি তারা। আমার মতে, যারা বাড়ির ভেতরে ঢুকছে, তারা জুয়েলকে অন্য কোথাও সরিয়ে রেখেছে।”
যুবদলের আরেক নেতা বলেন, “বাড়ির ভেতরে আওয়ামী লীগ নেতা আছেন সন্দেহে এলাকাবাসী বহুতল ভবনটি ঘেরাও করে রেখেছেন। কেউ যাতে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য ভেতর থেকে গেট বন্ধ করে দেওয়া হয় এবং জুয়েলকে রক্ষা করার জন্য নানা কৌশলও চলে।”
সদর থানা পুলিশের উপপরির্দক (এসআই) বজলুর রহমান বলেন, “আমরা খবর পেয়েছি, একটি বাড়িতে আওয়ামী লীগের এক নেতা রয়েছেন। আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি, তল্লাশি করছি। এখনো পর্যন্ত কাউকে পাওয়া যায়নি। তবে তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে।”