
শেরপুর প্রতিনিধি:
সর্প দংশনের হাত থেকে বাঁচতে বেহুলা-লখিন্দরের বাসর ঘর হয়েছিলো নিছিন্দ্র লোহার ঘরে। এরপর শেরপুরের হালিম মিয়া (২৫) কবলমাত্র নামের জন্য আরো একটি ইতিহাস রচনা করলেন তার নিজের বাসর ঘর পুকুরের পানির উপর নির্মাণ করে। ইতিমধ্যে শেরপুরে হালিম মিয়ার ব্যতিক্রমি এ পুকুরের পানির উপরে বাসর ঘরটি বেশ নজর কেড়েছে।
জানা গেছে, শেরপুর সদর উপজেলার চর শেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়ার আব্দুল হামিদের ৯ ছেলেমেয়ের মধ্যে সবার ছোট হালিম মিয়া। তিনি পেশায় ওয়ার্কশপ শ্রমিক। তার ইচ্ছা ছিল ব্যতিক্রমীভাবে বিয়ে করার। সেই ইচ্ছা থেকে এমন ভিন্ন আয়োজনের কথা মাথায় আসে তার। তাই তিনি ২২ জুলাই শুক্রবার তার বিয়ে উপলক্ষে এমন ব্যতিক্রমী বাসর ঘরটি তৈরি করেন। এ ঘটনার পর বিকেল থেকে পানির উপর বাসর ঘরটি দেখতে ভিড় শুরু করে আশপাশের লোকজন।
হালিম মিয়া বলেন, আমার বিয়ে কথা ফাইনাল হওয়ার পর থেকে আমার আমার ইচ্ছা হয় ব্যতিক্রম কিছু করার। সেই ব্যতিক্রমী ইচ্ছা থেকে আমার নানা ও চাচা মিলে উদ্যোগ নেই পানিতে বাসর ঘর তৈরি করার। পরে গত ৪ থেকে ৫ দিন ধরে আমার নানা ও চাচা মিলে আমাদের বাড়ির পাশে পুকুরের ওপর খুব কষ্ট করে তৈরি করেন এই বাসর ঘর। পরে আস্তে আস্তে আশপাশের মানুষ তৈরি বাসর ঘরটি দেখতে আমার বাড়িতে আসতে শুরু করে। আমার খুব ভালো লাগছে, আমি অনেক প্রশংসা পাচ্ছি।
চাচা রোকন সরকার বলেন, আমার ভাতিজার খুব ইচ্ছা ব্যতিক্রমভাবে বিয়ে করবে। পরে বিয়ে ঠিক হলে আমরা পারিবারিকভাবে কয়েকবার বসে সিদ্ধান্ত নেই কি করা যায়। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত হয় পানির ওপরে বাসর ঘর করার। বাড়ির পাশে একটা পুকুর আছে, সেই পুকুরে মাঝখানে বাসর ঘর বানানোর কাজ শুরু হয়। বানানোর সময় অনেক মানুষ বাজে কথা বলেছিল। কিন্তু সব সম্পূর্ণ হয়ে গেলে এই বাসর ঘর দেখতে মানুষ ভিড় শুরু করে।
যোগিনীমুড়া থেকে বাসর ঘর দেখতে আসা সোহেল রানা বলেন, এর আগে আমার জীবনে এমন বাসর ঘর কোনদিন দেখিনি। এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পেরে দেখতে এসেছি, আসলেই ব্যতিক্রম এটি।
হেরুয়া তালুকপাড়া থেকে আসা সাইফুল ইসলাম বলেন, পানির মধ্যে বাসর ঘর সত্যিই খুব ভালো হয়েছে। তার চমৎকার একটি আইডিয়া। খুব ভালো হয়েছে।
চরশেরপুরের বালুরঘাট থেকে আসা শহিদুল ইসলাম জানান, চমৎকার একটি আয়োজন। আমার খুব ভালো লেগেছে।
চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সেলিম রেজা বলেন, আমার ইউনিয়নে এমন বিয়ে হওয়ায় মানুষের মাঝে হৈচৈ শুরু হয়েছে। আমার জানা মতে, পানিতে এমন বাসর ঘর দেখিনি। বিভিন্ন মানুষ দেখতে আসছে এই বাসর ঘর।