
আশিকুর রহমান:
বিএনপি-জামায়াতের লাগাতার হরতাল, অবরোধ, শ্রমিক অসন্তোষ ইত্যাদি কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে বলে মন্তব্য করছেন গাজীপুরের সাধারণ মানুষ। এছাড়াও অর্থনৈতিক সংকটের মুখে দিনপার করতে হচ্ছে বলেও অভিযোগ এ জেলার জনসাধারণের।
ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ডের লিপ্ত না হয়ে, সুস্ঠ গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ক্ষমতা পরিবর্তনের প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন গাজীপুরের সাধারণ জনগণ। গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার খেটে খাওয়া সাধারণ জনগণের অনেকেই বিএনপি-জামাতের ডাকা হরতাল-অবরোধের নামে বিভিন্ন গার্মেন্টস,দোকানপাট, হাসপাতাল ভাংচুরসহ গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
জানা যায়, শিল্প অধ্যুষিত এ জেলায় চলমান নৈরাজ্যের কারণে অর্থনৈতিক চাকা মুখ থুবড়ে পড়েছে। গার্মেন্টস শ্রমিকদের বেতনের উপর নির্ভর করে এ জেলার বিভিন্ন ব্যবসা- বাণিজ্য। বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে উস্কানী মূলক আন্দোলনের কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য একেবারে থমকে গিয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন কাঁচামাল ব্যবসায়ী জানান, শ্রমিক আন্দোলনের কারণে ঠিকমতো দোকান খুলতে পারিনি। অনেক ঝুঁকি নিয়ে সে সময় দোকান খুলতে হয়েছে। যেখানে গড়ে প্রতিদিন ৫-৬ হাজার টাকা বিক্রি হতো, সেখানে বিক্রি হচ্ছে ২-৩ হাজার টাকা। তিনি বলেন, ' আমার দোকানের বেশির ভাগ ক্রেতাই গার্মেন্টস শ্রমিক'। এ মাসে ঠিক মতো বাসা ও দোকান ভাড়া দিতে পারবো কিনা তা বলতে পারছিনা।' আরেকজন কসমেটিকস ব্যবসায়ী জানান, তার দোকানের অধিকাংশ ক্রেতাই হচ্ছেন, গার্মেন্টসের নারী শ্রমিকরা। হরতাল-অবরোধ ও শ্রমিক আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই তার দোকান ক্রেতাশূণ্য হয়ে পরেছে। বেচা-বিক্রি একেবারে নাই বললেই চলে।
সর্বস্তরের ব্যবসায়ীদের দাবি, হরতাল-অবরোধ বন্ধ করা হউক। তারা জানান, এভাবে চলতে থাকলে ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে গ্রামের বাড়িতে যাওয়া ছাড়া আর অন্য কোন উপায় নেই। সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি না করে রাজনৈতিক আন্দোলন করার প্রক্রিয়া উদ্ভাবনের পথ বের করার আহ্বান জানান অনেকেই। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার হুমকি সৃষ্টি করে যারা ক্ষমতার পালাবদল করতে চান তাদের প্রতিও জনসাধারণের অসন্তোষ লক্ষ্য করা যায়।
অন্যদিকে, হরতাল-অবরোধ ও শ্রমিক আন্দোলনের নামে অরাজকতা ঠেকাতে সচেষ্ট গাজীপুরের প্রশাসন। র্যাব,পুলিশের পাশাপাশি অন্যন্যা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে প্রতিনিয়ত অবস্থান করছেন। গাজীপুরের প্রশাসন বলছে, গার্মেন্টস কর্মীদের বেতন বৃদ্ধির দাবীকে পুঁজি করে দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার লক্ষ্যে দুষ্কৃতিকারীরা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছে।