Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সম্পাদকীয় / মূল্যস্ফীতির চাপ, সঞ্চয় হারাচ্ছে মানুষ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

মূল্যস্ফীতির চাপ, সঞ্চয় হারাচ্ছে মানুষ

February 07, 2023 05:40:54 PM   সম্পাদকীয়
মূল্যস্ফীতির চাপ, সঞ্চয় হারাচ্ছে মানুষ

কমে যাচ্ছে সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ের জায়গা। শহরাঞ্চলের মানুষ সাধারণত ব্যাংক, সঞ্চয়পত্র এবং শেয়ারবাজারে তাদের সঞ্চয়ের অর্থ বিনিয়োগ করে থাকে। প্রথমে মানুষ টাকা জমা রাখেন ব্যাংকে। এরপর বেশি নিরাপত্তা ও বেশি সুদের আশায় অনেকে টাকা সঞ্চয়পত্রেও বিনিয়োগ করে থাকেন। আবার ডাক বিভাগের সঞ্চয় ব্যাংকেও অনেকে টাকা জমা রাখেন। বিদেশ থেকেও তিন ধরনের বন্ডে বিনিয়োগ করে থাকেন প্রবাসীরা। এসব বিনিয়োগে ব্যাংকের সঞ্চয় থেকে বেশি সুদ পাওয়া যায়। আবার রয়েছে কর ছাড়সহ নানা সুবিধাও। কিন্তু গ্রামাঞ্চলের অধিকাংশ মানুষের সঞ্চয় বিনিয়োগের একমাত্র জায়গা কেবলমাত্র ডাকঘর। সেই ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাংক বিধি অনুযায়ী পরিচালিত সঞ্চয়-স্কিম বা কর্মসূচির সুদের হার কমিয়ে প্রায় অর্ধেক করেছে সরকার, ফলে এ মানুষগুলোর অর্থ বিনিয়োগের জায়গা সীমিত হয়ে আসছে। মানুষ সুদ বেশি হলেও ব্যাংকের বাইরে সরকারি বিভিন্ন বিনিয়োগ পণ্য কেনা কমিয়ে দিয়েছে। ফলে দিনে দিনে এসব বিনিয়োগ পণ্যে মানুষের জমানো টাকা কমে যাচ্ছে। ডলারের দাম বাড়ায় মূল্যস্ফীতিতে প্রভাব পড়ছে। 
সাধারণ মানুষ বিশেষ করে নিম্ন মধ্যবিত্তদের আয় বাড়ছে না বরং ব্যয় ঠিকই বেড়েই চলেছে। ফলে পরিবারের খরচ মিটাতে বা সংসার চালাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের। জমানো টাকা ভেঙ্গে খরচ করছেন বাধ্য হয়ে। করোনা মহামারির পড় থেকে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে গতি অনেকটাই কমে এসেছে। অনেকে ব্যবসায় ক্ষতির স্বীকার হয়েছেন অনেকে হারিয়েছেন চাকুরী। একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, গত নভেম্বর শেষে সঞ্চয়পত্র, ডাক বিভাগের সঞ্চয়, এনআরবি বন্ড, প্রাইজ-বন্ড, পোস্টাল লাইফ ইনস্যুরেন্সে বিনিয়োগ কমে হয়েছে ৩ লাখ ৬২ হাজার ৪৪০ কোটি টাকা। অক্টোবরে যা ছিল ৩ লাখ ৬৩ হাজার ৪১৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে এসব খাতে মানুষের জমানো টাকা ছিল ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৩৮১ কোটি টাকা। আর আগস্টে ছিল ৩ লাখ ৬৪ হাজার ৪৫২ কোটি টাকা। দেশের মানুষের সঞ্চয় কমছে। 
বাংলাদেশ ব্যাংকের বার্ষিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থবছরে মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপির অনুপাতে মোট জাতীয় সঞ্চয় দাঁড়িয়েছে ২৫ দশমিক ৪৫ শতাংশ; আগের অর্থাৎ ২০২০-২১ অর্থবছরে যা ছিল ৩০ দশমিক ৭৯ শতাংশ। সেই হিসাবে এক বছরের ব্যবধানে সঞ্চয় কমেছে ৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ। তাই বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের উচিত অভ্যন্তরীণ সঞ্চয় বাড়িয়ে মানুষকে বিনিয়োগমুখী করা। সুতরাং এ বিষয়ে সরকারকে ভাবতে হবে অন্যথায় দেশের বিনিয়োগে চরমভাবে প্রভাব পড়বে। নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত সকলেই হারাবে তাদের সবটুকু সঞ্চয়। বাড়াতে পাড়বে না নতুন সঞ্চয়। তাই আশা করি সরকার বিষয়টিকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে আর সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় স্বস্তি ফিরে আসবে।