Date: October 25, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / আন্তর্জাতিক / যা জানা গেল সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি সম্পর্কে - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

যা জানা গেল সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি সম্পর্কে

October 24, 2025 08:41:04 PM   আন্তর্জাতিক ডেস্ক
যা জানা গেল সৌদি আরবের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি সম্পর্কে

সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আবদুলআজিজ রাজকীয় ডিক্রির মাধ্যমে শেখ সালেহ বিন ফাওজান বিন আবদুল্লাহ আল-ফাওজানকে দেশের নতুন গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। এই নিয়োগ ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের প্রস্তাবের ভিত্তিতে করা হয়েছে। তিনি প্রয়াত গ্র্যান্ড মুফতি শেখ আবদুলআজিজ বিন আবদুল্লাহ আল-আশাইখের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, যিনি ২৩ সেপ্টেম্বর ৮২ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।

শেখ আল-ফাওজান নতুন দায়িত্ব গ্রহণের পর সৌদি আরবের সিনিয়র আলেম পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ফতোয়া ও গবেষণা বিষয়ক সাধারণ সভাপতির দায়িত্বও পালন করবেন। এই পদগুলো মন্ত্রী পর্যায়ের সমপর্যায়ের এবং তাকে দেশের ধর্মীয় ও আইনি কাঠামোর এক গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্বে পরিণত করেছে।

শেখ সালেহ আল-ফাওজান ১৯৩৫ সালে সৌদি আরবের কাসিম অঞ্চলের আশ-শিমাসিয়াহ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশবে তিনি অনাথ হন এবং পরিবারের অভিভাবকত্বে বড় হন। স্থানীয় মসজিদের ইমাম শেখ হাম্মুদ বিন সুলায়মান আল-তিলাল তার প্রথম শিক্ষক ছিলেন, যিনি তাকে কুরআন ও প্রাথমিক ধর্মীয় শিক্ষা দেন। ১৯৫০ সালে তিনি আশ-শিমাসিয়াহর একটি সরকারি স্কুলে শিক্ষাজীবন শুরু করেন এবং ১৯৫২ সালে বুরাইদাহর আল-ফয়সালিয়াহ স্কুল থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন।

শেখ আল-ফাওজান পরে শিক্ষকতা শুরু করেন এবং ১৯৫৪ সালে বুরাইদাহর ‘শরিয়ত ইনস্টিটিউট’-এ ভর্তি হন। চার বছর অধ্যয়ন শেষে তিনি রিয়াদের শরিয়াহ কলেজে ভর্তি হয়ে ১৯৬১ সালে ইসলামী আইন (ফিকহ) বিষয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। একই প্রতিষ্ঠানে তিনি পরবর্তীতে স্নাতকোত্তর এবং পিএইচডি সম্পন্ন করেন। তার মাস্টার্স থিসিস ছিল ‘বংশগত সম্পদের বিজ্ঞানে তাত্ত্বিক বিশ্লেষণমূলক অনুসন্ধান’ এবং পিএইচডি গবেষণার বিষয় ছিল ‘ইসলামী শরিয়তে খাদ্য সংক্রান্ত বিধান’।

বহু দশক ধরে শেখ আল-ফাওজান রিয়াদের বৈজ্ঞানিক ইনস্টিটিউট, শরিয়াহ কলেজ এবং ধর্মীয় মূলনীতির কলেজে অধ্যাপনা করেছেন। তিনি এক সময় বিচার বিভাগীয় উচ্চতর ইনস্টিটিউটের পরিচালক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। ফিকহ, আকিদা ও ইসলামী নৈতিকতা বিষয়ে তার লেখা অসংখ্য গ্রন্থ মুসলিম বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত।

ধর্মীয় নেতৃত্বেও তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। নতুন দায়িত্ব গ্রহণের আগে তিনি সৌদি আরবের সিনিয়র আলেম পরিষদ ও মক্কার ফিকহ কাউন্সিলের দীর্ঘদিনের সদস্য ছিলেন। হজ মৌসুমে ইমাম ও দাঈদের জন্য ইসলামী সচেতনতামূলক কর্মসূচিতে তিনি বিশেষ ভূমিকা পালন করেছেন।

শেখ আল-ফাওজানের গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে নিয়োগ ইসলামী শিক্ষায়, বিচারশাস্ত্রে এবং জনসেবায় আজীবন নিবেদিত তার জীবনের স্বীকৃতি হিসেবে ধরা হচ্ছে। তিনি তাঁর পূর্বসূরি শেখ আবদুলআজিজ বিন আবদুল্লাহ আল-আশাইখের স্থলাভিষিক্ত হয়েছেন, যিনি দুই দশকেরও বেশি সময় সৌদি আরবের গ্র্যান্ড মুফতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে দেশের ধর্মীয় ও আইনি প্রতিষ্ঠানগুলোর নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।