Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / সিলেট / রোপা আমনের গন্ধে মাতোয়ারা কৃষাণ-কৃষাণীরা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

রোপা আমনের গন্ধে মাতোয়ারা কৃষাণ-কৃষাণীরা

November 28, 2022 07:16:27 AM  
রোপা আমনের গন্ধে মাতোয়ারা কৃষাণ-কৃষাণীরা

মাধবপুর সংবাদদাতা, হবিগঞ্জ:
বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি আবহওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাকা সোনালী ধানের গন্ধে কৃষকদের মনে এখন বেশ প্রফুল্লতা। অল্প কিছুদিনের মধ্যে পুরোদমে পাকা ধান কাটাতে হাতে কাচি নিয়ে মাঠে ব্যস্ত সময় পার করবে কৃষকরা। যদিও এরই মধ্যে কোন কোন এলাকায় ধান কাটা শুরু হয়ে গেছে এ বছর পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়াতে উপজেলায় আমন ধানের চাষে কৃষকের বাড়তি সেচ দিতে হয়েছে। ফলে বেড়েছে উৎপাদন খরচ। ইতোমধ্যে মাঠ থেকে নতুন ধান বাড়িতে তোলার জন্য আঙ্গিনা পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শুরু করছেন কৃষাণীরা। স্থানীয় বাজারে ধানের দামও ভালো রয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলার ১১ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় ২০০ হেক্টর বেশি।

সরেজমিনে গতকাল ফসলের মাঠ ঘুরে দেখা যায়, মাঠজুড়ে পাকা আমন ধান। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা কেউ ধান কাটছেন, কেউ বা আঁটি বাঁধছেন।

উপজেলার আলাকপুর গ্রামের কৃষক মো. ফরুক মিয়া বলেন, এ বছর ৩ বিঘা জমিতে ব্রি-৪৯ জাতের আমন ধানের চারা রোপণ করেছিলাম। ফলন পেয়েছি প্রায় ৫০ মণ। ফলন প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়েছে। এ বছর ধানের উৎপাদন খরচ বাড়লেও বাজারে নতুন ধানের দাম বেশ ভালো। আশা করছি, ধানের দাম আরও বাড়বে।

একই গ্রামের কৃষক মো. নানু মিয়া জানান, আগে আমন ধান কাটা ও মাড়াই মূলত অগ্রহায়ণের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হতো, কিন্তু এখন তা এগিয়ে এসেছে। এখন কৃষকেরা আগাম জাত ও হাইব্রিড ধান চাষে ঝুঁকছে। এতে কম সময়ে অধিক ফলন হচ্ছে। পাশাপাশি একই জমিতে অন্য ফসল চাষের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। ফলে উৎপাদন ও আয় দুটোই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই ধানের রোগবালাই খুব কম। ফলন আশার চেয়ে বেশি হয়েছে। সাধারণত অগ্রহায়ণ মাসের শেষ দিকে আমন ধান কাটা হয়। এবার মাস দেড়েক আগেই এই ধান পাকতে শুরু করেছে। সব খরচ বাদ দিয়ে এবার লাভবান হবেন বলে আশা করছেন কৃষকরা। মাধবপুর পৌরসভার বাজার এলাকার ধান ব্যবসায়ী মো. কালা মিয়া বলেন, বাজারে নতুন ধান প্রতি মণ ১ হাজার ১৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর একই ধান ৮৫০ থেকে ৯০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হয়েছিল।

উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, আমন ধানের ফলন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে নিয়মিত মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়েছি, এখনও দিচ্ছি। এ বছর ব্রি-৪৯, ব্রি-৮৭, ব্রি-৭৫, বিনা-১৭, বিনা-৭ ও ধানী গোল্ড জাতের ধানের আবাদ বেশি হয়েছে। সব জাতের ধানেরই ফলন ভালো হয়েছে।

মাধবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আল মামুন হাসান বলেন, এ বছর উপজেলায় রেকর্ড পরিমাণ জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে। ফলনও হয়েছে ভালো। আমরা আগাম ও স্বল্পমেয়াদী ধানের জাত আবাদের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছি। এতে একদিকে ধানের উৎপাদন যেমন বেড়েছে, অন্যদিকে বোনাস ফসল হিসাবে সরিষা বা আলু আবাদের সুযোগ হচ্ছে।