
সালথা (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সালথায় মশার কয়েল থেকে সৃষ্ট অগ্নিকাণ্ডে একটি জেলে পরিবারের সর্বস্ব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আগুন লাগার সময় ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারেনি পরিবারটি। বুধবার (১৯ মার্চ) দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলার বল্লভদী ইউনিয়নের বিষ্ণুদি পশ্চিম পাড়ার দিনমজুর জেলে বাবুল মোল্যার বাড়িতে এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। এতে অসহায় জেলে পরিবারটি নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
জানা যায়, প্রতিদিনের মতো গোয়ালঘরে মশার কয়েল জ্বালিয়ে বাবুল মোল্যার স্ত্রী বিউটি বেগম পাঁচ বছরের মেয়েকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। বাবুল মোল্যা বাড়ির পাশের বাওরে মাছ ধরছিলেন। হঠাৎ গোয়ালঘরে আগুন লেগে যায়। আগুনের আলোতে ঘুম ভেঙে গেলে বিউটি বেগম চিৎকার দিয়ে ঘর থেকে বের হন। পাটকাটির বেড়া হওয়ায় মুহূর্তেই গোয়ালঘরের আগুন বসতঘরে ছড়িয়ে পড়ে। কোনো বাধা ছাড়াই আগুন সবকিছু পুড়িয়ে নিভে যায়।
অগ্নিকাণ্ডের সময় বিউটি বেগম ঘর থেকে বের হলেও আতঙ্কে পাঁচ বছরের মেয়ে ফাতেমার কথা ভুলে যান। আগুন লাগার পর ফাতেমা ভয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। বাবুল মোল্যা মেয়েকে খুঁজে বের করে খাটের নিচ থেকে উদ্ধার করেন, এতে প্রাণে রক্ষা পায় ফাতেমা। কিন্তু অগ্নিকাণ্ডে বাবুল মোল্যার গোয়ালঘর, বসতঘর ও রান্নাঘর পুড়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। গোয়ালঘরে থাকা একটি গাভী পুড়ে মারা যায় এবং বাছুরটি মারাত্মকভাবে দগ্ধ হয়। এছাড়া শতাধিক হাঁস-মুরগি আগুনে পুড়ে মারা যায়। ছোট্ট ফাতেমার জন্য কেনা নতুন জামাটিও পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়রা জানান, বাবুল মোল্যা একজন মৎস্যজীবী দিনমজুর। গ্রামের একপাশে বাওর এলাকা হওয়ায় আগুন নেভাতে তেমন কেউ এগিয়ে আসেনি। আগুনে তার বসতঘরসহ সবকিছু পুড়ে নিঃশেষ হয়ে গেছে। ঘর থেকে কোনো কিছুই বের করা সম্ভব হয়নি। এখন গোসল করে কাপড় পরিবর্তন বা ইফতার করার মতো কিছুই নেই। মূল্যবান কাগজপত্র, এমনকি ভোটার আইডি কার্ডও পুড়ে গেছে। এই দুঃসময়ে বাবুল মোল্যার পরিবারের জন্য সবার দোয়া ও সহযোগিতা কামনা করা হচ্ছে।