
কিশোরগঞ্জ সদর সংবাদদাতা:
কিশোরগঞ্জের হাওরের কৃষকদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল টেকসই ও মজবুত বেড়িবাঁধ। প্রতিবছর উজান থেকে নেমে আসা ঢলের পানিতে ফসল তলিয়ে যাওয়ার ভয় ছিল কৃষকদের নিত্যসঙ্গী। এবার হাওর এলাকায় নতুন করে নির্মিত বেড়িবাঁধ কৃষকদের মাঝে স্বস্তি এনে দিয়েছে।
জানা যায়, কিশোরগঞ্জের ৯টি উপজেলায় প্রায় ২৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ ১২৯টি ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ ও সংস্কার করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধানে এ কাজ বাস্তবায়িত হয়েছে। হাওরের বিস্তীর্ণ এলাকায় বোরো ধান রক্ষায় এই বাঁধগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বেশিরভাগ এলাকায় বেড়িবাঁধের কাজ সন্তোষজনক হলেও মিঠামইন উপজেলার কয়েকটি স্থানে কাজের মান নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু এলাকায় পুরনো বাঁধের মাটি ব্যবহার করে নতুন বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে, যা নিয়মবহির্ভূত। অনেক জায়গায় বাঁধের উচ্চতা প্রয়োজনের তুলনায় কম রাখা হয়েছে। কোথাও কোথাও বাঁধে ঘাস লাগানো হলেও পরিচর্যার অভাবে তা নষ্ট হয়ে গেছে।
এ বিষয়ে করিমগঞ্জ উপজেলার চংনোয়াগাঁও এলাকার কৃষক মুজাহিদ মিয়া ও সাইফুল ইসলাম বাদল জানান, তাদের এলাকায় নির্মিত বাঁধ বেশ মজবুত হয়েছে। বিশেষ করে স্থানীয়দের তদারকির কারণে কাজের মান ভালো হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবারের বাঁধের উচ্চতাও বেশি, যা কৃষকদের জন্য স্বস্তির বিষয়।
নিকলী উপজেলার শিংপুর ইউনিয়নের কৃষক আল-আমিন মিয়া ও মল্লিক মিয়া জানান, দুই বছর আগে নির্মিত বাঁধগুলোর তুলনায় এবারকার বাঁধ অনেক মজবুত হয়েছে। এতে তারা সন্তুষ্ট।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কিশোরগঞ্জ জেলার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘প্রতিবছরই বাঁধ নির্মাণে কিছু অভিযোগ আসে। এবার তদারকি আরও কঠোর ছিল। কোথাও ত্রুটি থাকলে দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
হাওরের কৃষকরা আশা করছেন, এই টেকসই বাঁধ তাদের কষ্ট লাঘব করবে এবং বছরের পর বছর ফসলহানির দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেবে।