Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / বিনোদন / দর্শকের মন মাতাতে চান বাঁশি আরিফ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

দর্শকের মন মাতাতে চান বাঁশি আরিফ

February 10, 2025 08:42:13 PM   নিজস্ব প্রতিবেদক
দর্শকের মন মাতাতে চান বাঁশি আরিফ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্প হয়তো সবারই জানা। তবে সেটি রয়ে গেছে কেবল বইয়ের পাতায়। কিন্তু বাংলার বাস্তবেও আছেন এক বাঁশিওয়ালা, যিনি হ্যামিলনের সেই চরিত্রের মতোই মুগ্ধতার সুর ছড়িয়ে চলেছেন দেশের নানা প্রান্তে। কাঁধে বাঁশির ঝোলা নিয়ে, বাঁশির সুরে মুগ্ধতার জাল বুনে, পাঁচ বছর ধরে নিরলসভাবে ছুটে চলেছেন আহসান হাবিব আরিফ—যিনি মানুষের কাছে পরিচিত "বাঁশি আরিফ" নামে।

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার রায়গঞ্জের রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা আহসান হাবিব আরিফ। তার বাবা মৃত মকবুল হোসেন। মাত্র আট বছর বয়স থেকেই তিনি বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে গান গাইতে শুরু করেন। এক সময় বাঁশির সুর তাকে মুগ্ধ করে তোলে, আর তখনই স্বপ্ন দেখা শুরু করেন—এই বাঁশির সুরেই তিনি জয় করবেন মানুষের মন।

এরপর বাঁশির তালিম নেন সাইফুর রহমান সুজনের কাছে। ধীরে ধীরে দক্ষতা বাড়তে থাকে, আর তিনি পেশাদার মিউজিশিয়ান হিসেবে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেতে শুরু করেন। ইতোমধ্যে তিনি দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেল ও লাইভ অনুষ্ঠানে বাঁশি বাজিয়ে দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন।

বাঁশির প্রতি ভালোবাসা থাকলেও শুরুতে পরিবার ও সমাজের বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল আরিফকে। তিনি বলেন,

“প্রথম দিকে পরিবার ও এলাকাবাসী বাঁশি বাজানোকে ভালোভাবে নেয়নি। বাবার মৃত্যুর পর ২০২০ সালে পরিবারের দায়িত্ব আমার ওপর পড়ে। সংসার চালানোর জন্য নানা রকম কাজ করতে হয়েছে, তবে বাঁশির প্রতি ভালোবাসা কখনো কমেনি। এখন এলাকাবাসী আমাকে নিয়ে গর্ব করে।”

বাঁশি আরিফের সুর যে কাউকে মুগ্ধ করে ফেলে। স্থানীয়রা বলেন,

"আরিফ যখন বাঁশি বাজায়, মনটা যেন অন্য জগতে হারিয়ে যায়। সে এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় বাঁশির সুর ছড়িয়ে দিচ্ছে, যা আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।"

প্রতিদিন কাঁধে বাঁশির ঝোলা নিয়ে বেরিয়ে পড়েন বাঁশি আরিফ। একেক দিন একেক গন্তব্য। তার ব্যাগে থাকে নানা রকম বাঁশি, আর সুরের মোহনায় মানুষের মন ছুঁয়ে যান তিনি। কোনো সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে, কোনো পথের ধারে—যেখানেই বাঁশি বাজান, সেখানেই সৃষ্টি হয় এক সুরেলা আবহ। কেউ তার কাছে বাঁশি শেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন, কেউবা আবেগে গেয়ে ওঠেন কোনো গান।

বাঁশিকে সঙ্গী করেই জীবনের পথচলা চালিয়ে যেতে চান তিনি। তার ভাষায়—

"বাঁশিতে ঘুণ ধরে ঠিকই, কিন্তু পোড়া বাঁশিতে ঘুণ ধরে না।"