
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেত্রী সাদিকা পারভীন পপি সম্প্রতি পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে আলোচনায় এসেছেন। খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় ছোট বোন ফিরোজা পারভীন খেয়ালি তার বিরুদ্ধে জিডি করেছেন, যা সবার মধ্যে বিভ্রান্তি তৈরি করেছে। একসময় পপির পরিবার একসঙ্গে বাস করলেও হঠাৎ করে পারিবারিক অশান্তির খবর সামনে আসে, যা পপির ভক্তদের জন্য একটি বড় চমক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পপির জীবন সংগ্রামের শুরু বেশ কষ্টসাধ্য ছিল। কিশোরী বয়সে ঢাকায় এসে কঠোর পরিশ্রমে নিজের পরিচিতি তৈরি করেন। তিনি বলেন, “আমি কখনোই আয়ের খোঁজ রাখিনি, আমার মা-বাবা সব দেখতেন। তবে একদিন জানতে পারি, আমার ব্যাংক হিসাব থেকে সব টাকা অন্য জায়গায় চলে গেছে, যা আমাকে গভীরভাবে কষ্ট দিয়েছে।”
এমন এক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, যখন পপি জানতে পারেন যে, তার যৌথ ব্যাংক হিসাব থেকে টাকা সরিয়ে অন্য কাউকে দেওয়া হয়েছে। এ খবর পেয়ে তিনি মর্মাহত হন এবং কৈফিয়ত চান। কিন্তু তাতে সাড়া পাননি। এর পরবর্তী সময়ে পপি জানালেন যে, তিনি তখন থেকেই তার মা-বাবার কাছে শত্রু হয়ে গেছেন।
পপির মা, মরিয়ম বেগম, তার মেয়ের এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন, তিনি নিজের জীবনের সমস্ত সময় ও অর্থ দিয়ে পপিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার ভাষ্য, “পপি শুধু আমার একমাত্র মেয়ে নয়, আরো পাঁচটি সন্তান রয়েছে। আমি কখনো ভাবিনি, পপি আমার সহায়তা অস্বীকার করবে।”
পপির মা আরও বলেন, পপি একসময় দাবি করেছিলেন, তার বাবার সোনাডাঙ্গার ১১ কাঠা জমির মধ্যে ৬ কাঠা জমি তার নামে লিখে দিতে হবে। পপি এই দাবি পূরণের জন্য একপ্রকার জোর করেই ওই জমি লিখিয়ে নেন, যা পরিবারে অশান্তির সৃষ্টি করে। পপির বোন ফিরোজা পারভীন খেয়ালি দাবি করেছেন, যে টাকার বিনিময়ে পপি ওই জমি লিখিয়ে নিয়েছিলেন, তার কোনো প্রমাণ নেই।
পপির দাবি, তার সারা জীবনের উপার্জনের অধিকাংশই তার মা-বাবা, ভাই-বোনেরা নিয়েছেন। তিনি জানান, তার বাবা সেই জমি ৬ কাঠা লিখে দিলেও, অন্য পাঁচ কাঠা জমি নিয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই। তিনি শুধু চান, নিজের জমি নিয়ে কেউ যেন তার সম্মান নিয়ে টানাটানি না করে।
পপির মা আবারও বলেন, “আমি চাই আমার সব সন্তান একসঙ্গে থাকুক। যদি পপি আমাদের সঙ্গে কথা বলে এবং সমাধান চায়, তাহলে এটি সম্ভব। অন্যথায়, আমি আইনগত ব্যবস্থা নেব।”
দেখা যাচ্ছে, দুই পক্ষই সমাধান চাচ্ছে, তবে তাদের মধ্যে সম্পর্কের টানাপোড়েন এখনও কাটেনি। পপির ভাষ্য, তিনি চান, তার পরিবার ভালো থাকুক এবং কেউ তার জমি নিয়ে কোনো সমস্যা সৃষ্টি না করুক। কিন্তু যতদিন সম্পর্কের টানাপোড়েন চলবে, ততদিন এ বিরোধের সমাধান পাওয়া যাবে কিনা, সেটি সময়ই বলবে।