
রংপুর প্রতিনিধি:
আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণনে অহিমায়িত মডেল ঘরে আশার আলো দেখছেন রংপুরের ষ চাষিরা। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর বলছে মডেল এই ঘরে ২৫-৩০ মেট্রিকটন আলু সংরক্ষণে কৃষকের সাশ্রয় হবে বছরে প্রায় দেড় লাখ টাকা। আর একেকটি অহিমায়িত মডেল ঘর ১২-১৫ বছর ব্যবহার করা যাবে। সেই হিসেবে দেড় কোটি টাকারও বেশি কোল্ড স্টোরেজ খরচ বাঁচবে কৃষকের, সঙ্গে কমবে সংরক্ষণ বিড়ম্বনাও।
রোববার (১৯ মার্চ) দুপুরে রংপুরে পীরগাছা উপজেলার কল্যাণী ইউনিয়নের স্বচাষে অহিমায়িত মডেল ঘরে আলু সংরক্ষণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে নতুন এই ঘরে আলু সংরক্ষণ পদ্ধতি তুলে কৃষকদের আশার কথা শোনান কৃষি বিপণন অধিদপ্তর।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানায়, আলুর বহুমুখী ব্যবহার, সংরক্ষণ ও বিপণন উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে রংপুর বিভাগসহ দেশের ১৬ টি জেলায় ৪৫০ টি এই অহিমায়িত মডেল ঘরে আলু সংরক্ষণ করা হবে। এরমধ্যে রংপুর জেলায় ৭৫টি মডেল ঘরের মধ্যে চলতি অর্থবছরে ৪৫টি ঘরে আলু সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি ঘরে ২৫-৩০ মেট্রিকটন আলু ৮ মাস ধরে সংরক্ষণ করা যাবে। জেলার এসব অহিমায়িত মডেল ঘরগুলো আজ একযোগে আলু সংরক্ষণের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব।
কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপহার পাওয়া মডেল ঘর ও স্থানীয় কৃষক বিপণন দলের সভাপতি আলু চাষি তৈয়বুর রহমান জানান, 'আমরা আলুচাষিরা ন্যায্যমূল্য পাইনা। ফলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হই। কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের পাওয়া এই মডেল ঘরে আমরা এখন ৩০ মেট্রিকটনের বেশি আলু রাখতে পারবো। এতে আমাদের এই ঘর থেকে হিমাগারের তুলনায় দেড় লাখ টাকা সাশ্রয় হবে। বিশেষ করে আলুর দাম বাড়লে চাহিদা অনুযায়ী আমাদের ইচ্ছেমতো আলু বিক্রয় করতে পারবো। সরকারের এই উদ্যোগ প্রতিটি আলু চাষিরা জন্য সুফল বয়ে আনবে বলে অভিমত এই চাষির।'
রংপুর জেলা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের সিনিয়র বিপণন কর্মকর্তা রবিউল হাসান বলেন, 'চাষিদের আলু সংরক্ষণে খরচ লাঘবে আমরা অহিমায়িত এই মডেল ঘরের পাইলট প্রোগ্রাম গত বছর থেকে হাতে নিয়েছি। সেই প্রোগ্রামের আজ বাস্তব রুপ পেতে শুরু করেছে। আমাদের এই একেকটি ঘর নির্মাণে ব্যয় হচ্ছে দেড় লাখ টাকা এর বিপরীতে কৃষক ১২ -১৫ বছর ধরে নিশ্চিন্তে আলু সংরক্ষণ করতে পারবে। একেকটি ঘরে প্রায় ৩০ মেট্রিকটন আলু ৮-৯ মাস সংরক্ষণ করা যাবে। এতে প্রতি বছরে আলু চাষির দেড় থেকে পৌনে দুই লাখ টাকা হিমাগার খরচ বাচবে বলেও জনান তিনি।'
এদিকে আলু সংরক্ষণের এলাকা ঘুরে দেখাগেছে, এই দিন দুপুর ২ ঘটিকায় কল্যাণী ইউনিয়নের স্বচাষ এলাকায় কৃষক বিপণন দলের সভাপতি আলু চাষি তৈয়বুর রহমানের উঠানে একটি মডেল হিমায়িত ঘরের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। এতে আলু সংরক্ষণের এই পদ্ধতি সম্পর্কে চাষিদের উদ্বুদ্ধ করতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন, কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার।
এই উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের রংপুর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোঃ আফতাব হোসেন, রংপুর কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনোয়ারুল হক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ওবায়দুর রহমান মন্ডলসহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর ও কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং স্থানীয় আলুচাষিবৃন্দ।