
কুবি প্রতিনিধি:
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) আয়োজিত হলো ‘তারুণ্য উৎসব-২০২৫’। বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী-এর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এনডিসি শীষ হায়দার চৌধুরী। অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত) মোহাম্মদ আনোয়ার উদ্দিন, পেনিনসুলা কনসোর্টিয়ামের নির্বাহী পরিচালক এম. এ. এন. শাহীন, কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পঙ্কজ বড়ুয়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল এবং তারুণ্য উৎসবের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান।
অনুষ্ঠানের সঞ্চালনায় ছিলেন বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সুমাইয়া আফরিন সানি এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উপসচিব মোহাম্মদ সাইফুল হাসান।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। এরপর ‘জুলাই বিপ্লব ও তথ্যপ্রযুক্তি’ বিষয়ক একটি ডকুমেন্টারি এবং ‘জুলাই বিপ্লবে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়’ শীর্ষক আরেকটি ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়। উৎসব উপলক্ষে অনলাইন ভিত্তিক কুইজ প্রতিযোগিতা এবং একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়।
বিশেষ অতিথি শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, “তারুণ্য উৎসবের মাধ্যমে আমরা তরুণদের কাছে একটি বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছি -এই দেশের চালিকা শক্তি তারুণ্য। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, নব্বইয়ের গণআন্দোলন এবং চব্বিশের জুলাই বিপ্লবের মতো প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে তরুণদের ভূমিকা ছিল অপরিসীম। তারুণ্য উৎসবের কেন্দ্রীয় আয়োজন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে করার কারণ হলো—জুলাই বিপ্লবের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থান ছিল কুমিল্লা। এছাড়া, এই এলাকা শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ভবিষ্যতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ইনোভেশন হাব স্থাপন করা হবে।”
অনুষ্ঠানের সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, *“আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়কে, যারা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ আয়োজন করেছে। তরুণদের এগিয়ে যাওয়ার অন্যতম মাধ্যম এখন তথ্যপ্রযুক্তি। আইসিটি মন্ত্রণালয় একটি সুন্দর উদ্যোগ নিয়েছে, যা তরুণদের উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে সহায়তা করবে।
আজকের তথ্যপ্রযুক্তি মানেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) যুগ, যা দ্রুত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের তরুণদের এখন এই খাতে দক্ষতা অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে। যদি মন্ত্রণালয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সম্পর্কিত কোনো প্রকল্প হাতে নেয়, তাহলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো।”*
তিনি আরও বলেন, “আইসিটি মন্ত্রণালয়ের সচিব ঘোষণা দিয়েছেন যে এখানে একটি আইসিটি হাব স্থাপন করা হবে। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। আমরা এই হাবকে দেশের প্রথম এআই হাব বানানোর জন্য চেষ্টা করবো, কারণ এই খাতে দেশে-বিদেশে বিপুল চাহিদা রয়েছে।”
উৎসবের আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, *“সফলভাবে অনুষ্ঠান আয়োজনের জন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই। ভাষার মাসে এমন আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত।
আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের শহীদদের, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের এবং বিশেষভাবে ২৪ জুলাই বিপ্লবে আত্মত্যাগ করা শহীদদের। আমরা গভীরভাবে স্মরণ করছি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শহীদ আব্দুল কাইয়ুমকে, যিনি ২৪ জুলাইয়ের আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেছেন।”*
তিনি আরও বলেন, “কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দেশ ও জাতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমাদের গ্লোবাল মার্কেটে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হবে এবং নিজেদের গ্লোবাল প্রোডাক্ট হিসেবে পরিচিত করতে হবে।”