
কুবি প্রতিনিধি:
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে ‘রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী ১৪৩২’ উদযাপন করা হয়েছে। সোমবার (১৯ মে) থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমঞ্চে বর্ণাঢ্য এই আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন। আরও উপস্থিত ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মোহাম্মদ মশিউর রহমান, কুমিল্লা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অধ্যক্ষ শামীম হায়দার, সাধারণ সম্পাদক কমল চন্দ খোকন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক শিশিরসহ কুমিল্লার বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ।
অনুষ্ঠানে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন কুমিল্লা শিল্পকলা একাডেমির প্রশিক্ষক মাহতাব সোহেল, স্বনামধন্য সংগীতশিল্পী ও প্রশিক্ষক আলপনা দাস এবং প্রশিক্ষক অভিজিৎ সরকার।
আয়োজনে টাইটেল স্পন্সর ছিল কেপি প্রোপার্টিজ লিমিটেড। মিডিয়া পার্টনার হিসেবে ছিল এনটিভি অনলাইন ও প্রতিদিনের বাংলাদেশ। গিফট পার্টনার হিসেবে ছিল প্রগতি বইঘর।
সাংস্কৃতিক আয়োজনে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুলের কবিতা আবৃত্তি, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনের মাধ্যমে দুই কবির শিল্পধারার প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। আয়োজনে বিশেষ আকর্ষণ ছিল কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা নাটক ‘মাল্যদান’ এর মঞ্চায়ন, যা পরিবেশন করে থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যদল।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে সেরা পারফরমারদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়। আবৃত্তি বিভাগে প্রথম হন কিফায়াত উল হক, সংগীতে প্রথম হন নিলয় দাস এবং নৃত্যে প্রথম হন রুমা রানী দেবসেনা।
কুমিল্লা সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি অধ্যক্ষ শামীম হায়দার বলেন, “বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন ২৫ বৈশাখ, আর জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের জন্ম ১১ জ্যৈষ্ঠ। এ দুই মহাকবির জন্মদিনের মাঝামাঝি সময়ে এই সম্মিলিত আয়োজনটি সত্যিই অনন্য। থিয়েটার কুবি অত্যন্ত দৃষ্টিনন্দন আয়োজন করেছে।”
সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন বলেন, “ঝড়-বৃষ্টির মধ্যেও এমন সফল আয়োজন সত্যিই প্রশংসনীয়। তবে এটি আবারও প্রমাণ করল যে, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ অডিটোরিয়ামের প্রয়োজন। বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্ঞানচর্চা ও সাংস্কৃতিক বিকাশে অডিটোরিয়াম থাকা জরুরি।”
তিনি আরও বলেন, “রবীন্দ্র-নজরুল আমাদের চেতনার কেন্দ্রবিন্দু। আমাদের প্রেম, বিরহ, বিদ্রোহ, চিন্তা-চেতনায় তাঁদের প্রভাব অবিচ্ছেদ্য। আজকের এই অনুষ্ঠানে এসে খুবই মুগ্ধ হয়েছি।”
থিয়েটার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, “আবহাওয়া আমাদের কিছুটা ভোগালেও প্রোগ্রামটি সফল হয়েছে। আজকের নাট্য পরিবেশনায় আমি নতুন দিক আবিষ্কার করেছি। আমি কৃতজ্ঞ থিয়েটার কুবির সকল সদস্যদের প্রতি, যাঁরা এই অনুষ্ঠান বাস্তবায়নে নিরলস পরিশ্রম করেছেন।”
রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উপলক্ষে এমন একসাথে সাহিত্য-সংস্কৃতির বিশাল উৎসব আয়োজন করায় অংশগ্রহণকারী দর্শক-শ্রোতা, অতিথি এবং অংশগ্রহণকারীদের মাঝে ব্যাপক উচ্ছ্বাস দেখা যায়। উপস্থিত সবাই এ ধরনের আয়োজন প্রতি বছর অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান।