
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে জনসাধারণ যখন নাকাল ঠিক সেই সময়ে সাতক্ষীরার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কলারোয়া জোনাল অফিসের ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলের খড়গ যেন মরার উপর খাঁড়া হয়ে দেখা দিয়েছে। কলারোয়া উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার গ্রাহক। উপজেলার অধিকাংশ গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন গত মার্চ মাসের তুলনায় এপ্রিলে মাসে বিদ্যুৎ বিল ৫ থেকে ৬ গুণ বেশি এসেছে।
সরেজমিনে অনেক গ্রাহকের সাথে কথা বলে জানা যায়, কলারোয়া পৌরসদরের তুলশিডাঙ্গা গ্রামের সিরাজুল ইসলামের বিদ্যুৎ বিলে ৮০ ইউনিট ব্যবহার মোট ৪৬৪ টাকা। সরবরাহকৃত বিলে ২৩৫ ইউনিট ব্যবহার দেখিয়ে মোট ১৫৯২ টাকা বিল দেওয়া হয়েছে। ২০২৩ সালে ৫ মে এই মিটারে ২৪ দিনে বিদ্যুত ব্যবহার হয়েছে ৩৪ ইউনিট। একই বাড়ির ৬টি মিটারে একইভাবে প্রতারণার বিল দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ অফিস। গ্রাহক সামসুন্নাহারের মার্চে বিল ৪১৬ টাকা এপ্রিলে বিল ১৭৩৮ টাকা। কলারোয়া বাজারের বাণিজ্যিক গ্রাহক রনির মার্চে বিল ১৪৩৫ টাকা এপ্রিলে বিল ২৮৪৫ টাকা। গদখালির মোজাহিদের মার্চে বিল ৫৪৬ টাকা এপ্রিলে বিল ১৮২৫ টাকা। বসন্তপুরের মিলনের মার্চে বিল ৪১৮ টাকা এপ্রিলে বিল ১৪২৮ টাকা।
খবর নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় অধিকাংশ গ্রাহকের সাথে এমন প্রতারণা করেছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। এভাবেই প্রতারণা করে লাখ লাখ টাকা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি হাতিয়ে নেওয়ার বিল সরবরাহ করেছেন।
সূত্র জানায়, পল্লী বিদ্যুৎ গ্রাহক পর্যায়ে মূল্য ১-৭৫ ইউনিট ৪ টাকা ৮৫ পয়সা, ৭৬-২০০ ইউনিট ৬ টাকা ৬৩ পয়সা, ২০১-৩০০ ইউনিট ৬ টাকা ৯৫ পয়সা, ৩০১-৪০০ ইউনিট ৭ টাকা ৩৪ পয়সা, ৪০১-৬০০ ইউনিট ১১ টাকা ৫১ পয়সা, ৬০০ ইউনিটের ঊর্ধ্বে ১৩ টাকা ২৬ পয়সা হারে গ্রাহকের বিদ্যুতের মূল্য পরিশোধ করতে হয়। এই কারণে বিদ্যুতের ব্যবহার বেশি দেখিয়ে প্রতারণা করে গ্রাহকদের পকেট কাটা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন গ্রাহকরা।
জাহিদুল ইসলাম নামের এক গ্রাহক প্রশ্ন রেখে বলেন, এই এলাকার বেশির ভাগ মানুষ খেটে খাওয়া। ঘনঘন লোডশেডিং হওয়ার পরেও পল্লী বিদ্যুতের এই কারচুপি কিছুতেই মেনে নেবেন না তারা।
উপজেলা নাগরিক কমিটির আহবায়ক এড. কাজী আব্দুল্লাহ হাবিব বলেন, ভুলবশত হলে দুই একটা হতে পারতো। পল্লী বিদ্যুৎ ইচ্ছা করে এই কাজটা করেছে। যারা দিনমজুর, দিন আনে দিন খায়, তারা এই বিল কিভাবে পরিশোধ করবে? পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করবো যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বিলের ঝামেলা মিটিয়ে ফেলবেন। গ্রাহকদের সাথে প্রতারণা করবেন না।
কলারোয়া জোনাল অফিসে সদ্য যোগদানকৃত ডিজিএম ওবাইদুল্লাহ বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমি খতিয়ে দেখবে।