Date: April 30, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / রংপুর / কুড়িগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পেকিন জাতের হাঁস পালন - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

কুড়িগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পেকিন জাতের হাঁস পালন

February 26, 2025 07:43:04 PM   জেলা প্রতিনিধি
কুড়িগ্রামে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে পেকিন জাতের হাঁস পালন

কুড়িগ্রামে চীনের পেকিন জাতের হাঁস পালন ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এই হাঁসের দ্রুত বেড়ে ওঠা এবং সুস্বাদু মাংসের কারণে দিন দিন এর চাহিদা বাড়ছে। জেলার অনেক মানুষ এই হাঁস পালনের মাধ্যমে নিজেদের ভাগ্য বদলিয়েছে এবং সৃষ্টি হয়েছে নতুন কর্মসংস্থান।

জেলা প্রাণীসম্পদ বিভাগ জানায়, কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় প্রায় ৬ হাজার হাঁসের খামার রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬শতাধিক খামারি পেকিন জাতের হাঁস পালন করছেন।

রাজারহাট উপজেলার টগরাইহাট মাধাই গ্রামের খামারি মীর মোশাররফ হোসেন আধুনিক পদ্ধতিতে উঁচু মাচায় পেকিন হাঁসের খামার গড়ে তুলেছেন। পেকিন হাঁস মূলত মাংস উৎপাদনের জন্য পালন করা হয় এবং এটি দেখতে আকর্ষণীয় ও দ্রুত বর্ধনশীল। সঠিক পরিচর্যা এবং সুষম খাবারের মাধ্যমে মাত্র ৩০ থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে প্রতিটি হাঁস ৩ থেকে ৪ কেজি ওজনের হয়ে ওঠে। বর্তমানে তার খামারে এক হাজার পেকিন হাঁস রয়েছে।

এই হাঁসের চাহিদা দেশজুড়ে রয়েছে, যার কারণে খামারি মোশাররফ হোসেন হাঁসগুলো ঢাকা, কুমিল্লা, বগুড়া, সিরাজগঞ্জসহ বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত করছেন অনলাইনের মাধ্যমে। তার দেখাদেখি স্থানীয় গ্রামে এবং আশপাশের এলাকায় অনেকেই পেকিন হাঁস পালনে আগ্রহী হয়েছেন, যার ফলে অর্ধশতাধিক গরিব নারী-পুরুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।

খামারি মীর মোশাররফ হোসেন বলেন, ব্যাংক লোন নিয়ে ২০২২ সালে ১০ হাজার ব্রয়লার মুরগি পালন শুরু করেন, কিন্তু বার্ড ফ্লু রোগে আক্রান্ত হয়ে সব মুরগি মারা যায়, ফলে বিশাল আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হন। তবে, এরপর আরডিআরএস বাংলাদেশের পেকিন হাঁসের সাইনবোর্ড দেখে তিনি আবারও উদ্বুদ্ধ হন এবং নতুন উদ্যোমে পেকিন হাঁস পালনে শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে লাভবান হচ্ছেন এবং স্থানীয় মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।

নারী শ্রমিক রহিমা বেগম জানান, তিনি ও অন্যান্য ২৫/৩০ জন মহিলা খামারে কাজ করে বাড়তি আয়ের সুযোগ পেয়েছেন। তারা প্রতি সপ্তাহে ২-৩ দিন করে কাজ করেন এবং প্রতিদিন ৩শ টাকা মজুরি পান।

আরডিআরএস বাংলাদেশের প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডা. সৌরভ কুমার সরকার জানান, তারা জেলার প্রাণীসম্পদ খাতের উন্নয়নে কাজ করছেন, যার মধ্যে খামারীদের পরামর্শ, আর্থিক সহায়তা, বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান এবং বাজারজাতকরণে সহায়তা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

রাজারহাট উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. রহমত আলী বলেন, প্রাণীসম্পদ খাতের উন্নয়নে সরকার ও স্থানীয় বেসরকারি সংস্থাগুলোর সহযোগিতা রয়েছে এবং খামারীদের আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী করতে কারিগরি সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে।