
খাগড়াছড়ি সংবাদদাতা:
খাগড়াছড়িতে চাকমা সম্প্রদায়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উৎসব ফুল বিজুর সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বাধার মুখে পড়েছেন স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোর থেকে জেলা সদরের চেঙ্গী নদীর বিভিন্ন ঘাটে এমন পরিস্থিতির সম্মুখীন হন তারা।
জানা গেছে, খবংপুড়িয়া ঘাটে সংবাদকর্মীদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করে ‘নো অ্যালাউ’ লেখা লাল কাপড়ে তৈরি ব্যানার ঝুলানো হয়। সরেজমিনে দেখা গেছে, সূর্যোদয়ের পর ফুল হাতে বাহারি পোশাকে বহু মানুষ ঘাটে এলেও কিছু যুবক ও কিশোর তাদের নদীতে নামতে দেয়নি। এমনকি সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে নদীতে ফুল উৎসর্গ করতেও বিরত থাকতে বলা হয়।
সাংবাদিকরা অভিযোগ করেন, উৎসবের সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়া হয়েছে, এমনকি নদীর পাড়ে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলির শব্দও শোনা যায়। এরপর নিরাপত্তার আশঙ্কায় সাধারণ পাহাড়িরা স্থান পরিবর্তন করে রিভার ভিউ পয়েন্ট ও চেঙ্গী সেতু অংশে গিয়ে ফুল বিজুর আনুষ্ঠানিকতা পালন করেন।
তবে এ বিষয়ে দায়িত্বশীল কেউ মুখ না খুললেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দাবি করা হচ্ছে, গত বছর পার্বত্য অঞ্চলের কিছু ঘটনার কভারেজ না দেওয়ায় এবার সংবাদমাধ্যমকে বর্জন করা হচ্ছে।
এ বিষয়ে খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সভাপতি তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য বলেন, “পার্বত্য তিন জেলার গণমাধ্যমকর্মীরা সব সম্প্রদায়ের উৎসবে সমানভাবে অংশ নেন। সংবাদ সংগ্রহে বাধা দেওয়া দুঃখজনক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। একটি স্বার্থান্বেষী মহল সাংবাদিকদের উসকে দিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রামে অস্থিতিশীলতা তৈরির অপচেষ্টা করছে।”
সাংবাদিকরা দাবি করেছেন, তারা সব সময়ই পার্বত্য এলাকার জনগণের সুখ-দুঃখে পাশে ছিলেন এবং থাকবেন। কারা এমন বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ছড়িয়ে সংবাদকর্মীদের টার্গেট করছে, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন তারা।
প্রসঙ্গত, পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ও অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর বর্ষ বিদায় ও নববর্ষ উদযাপন উপলক্ষে বর্ণিল উৎসব পালিত হয়ে থাকে, যা দেখতে প্রতি বছর হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন।