Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / গাজীপুরে পুলিশের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় ও নির্যাতনের অভিযোগ নারীর - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের...

গাজীপুরে পুলিশের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় ও নির্যাতনের অভিযোগ নারীর

January 29, 2025 05:36:32 PM   জেলা প্রতিনিধি
গাজীপুরে পুলিশের তিন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অর্থ আদায় ও নির্যাতনের অভিযোগ নারীর

গাজীপুরের মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম, এসআই সাইদুর রহমান এবং এএসআই হাবিবুর রহমানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে সেলিনা বেগম নামের এক নারী জেলা পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি জানান, তার স্বামী কালিয়াকৈরের সফিপুর দক্ষিণপাড়ায় বসবাস করেন এবং গার্মেন্টস এ চাকরি করেন। তাদের বাড়ি টাঙ্গাইলের ধনবাড়ি উপজেলার চাটাভাঙ্গা গ্রামে।

অভিযোগসূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত পুলিশ কর্মকর্তারা তার স্বামী সবুজ সরকারকে অবৈধভাবে গ্রেফতার করেন, শারীরিক নির্যাতন চালান এবং ভয়ভীতি দেখিয়ে তার কাছ থেকে অর্থ আদায় করেন। অভিযোগে বলা হয়, গত ১০ ডিসেম্বর ২০২৪ এসআই মহিদুল ইসলামের নির্দেশে এএসআই হাবিবুর রহমান মোবাইলে কল করে তার স্বামীকে ফাঁড়িতে ডেকে আনেন। স্বামী বিশ্বাসে ফাঁড়িতে গেলে ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম তাকে গ্রেফতার করেন এবং জানান, তার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রী ইতি বেগম তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য মহিদুল ইসলাম তার স্বামী থেকে দুই লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে সেলিনা বেগম ধার দেনা করে পঞ্চাশ হাজার টাকা নিয়ে মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ি পৌঁছান।

সেলিনা বেগম অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, পঞ্চাশ হাজার টাকা গ্রহণের পর ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম এবং এএসআই হাবিবুর রহমান তার স্বামীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন শুরু করেন। সেলিনা বেগম অভিযোগ করেন, তিনি কান্নাকাটি করে জানতে চান কেন তার স্বামীকে মারধর করা হচ্ছে, তখন মহিদুল ইসলাম তাকে বলেন, “আরো দশ হাজার টাকা আনো, আমি হাবিবুর রহমানকে বলবো মারধর বন্ধ করতে।” সেলিনা বেগম আরও পাঁচ হাজার টাকা সংগ্রহ করে পুলিশ ফাঁড়িতে যান, কিন্তু ৫৫ হাজার টাকা দিয়েও তার স্বামী এবং সেলিনা বেগমকে ফাঁড়িতে একরাত আটকে রাখা হয়। পরে এসআই সাইদুর রহমান সেলিনাকে বলেন, “আরো চল্লিশ হাজার টাকা নিয়ে আসো, আমি ইনচার্জ মহিদুল ইসলামের কাছে গিয়ে তোমার স্বামীকে ছাড়িয়ে দেব।”

সেলিনা বেগম আরও দাবি করেন, পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে কুপ্রস্তাবও দিয়েছেন। অভিযুক্তরা তার স্বামীকে দুই দিন ধরে ফাঁড়িতে আটকে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালান। পরবর্তীতে মহিদুল ইসলাম গং মিথ্যা নাটক সাজিয়ে তার স্বামীর দ্বিতীয় স্ত্রীর মাধ্যমে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। সেলিনা বেগম জানান, তার স্বামী, সবুজ সরকার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে আদালতে পাঠানো হয় এবং বর্তমানে গাজীপুর জেলা কারাগারে আটক আছেন।

সেলিনা বেগম বলেন, মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে এই ঘটনার কারণে তিনি মানসিক, আর্থিক এবং শারীরিকভাবে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে সুষ্ঠু তদন্ত এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত এএসআই হাবিবুর রহমানের মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি রিসিভ করে কথা না বলে সংযোগ কেটে দেন। মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্তাধীন এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

গাজীপুর পুলিশ সুপার (এসপি) ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক জানান, অভিযোগটি গ্রহণ করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।