
গাজীপুর সংবাদদাতা:
গাজীপুরে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) গণশুনানিতে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে উঠে এসেছে বিস্তর অভিযোগ। এর মধ্যে জেলার ২৩টি সরকারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির ১৬৫টি অভিযোগ তুলেছেন সেবাগ্রহীতারা। এরমধ্যে কিছু অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দিয়েছে দুদক। তাছাড়া ধাপে ধাপে সমাধানের আশ্বাস দিয়েছে সংস্থাটি। তবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পাশাপাশি অবান্তর কিছু অভিযোগও করা হয় বলে জানায় দুদক।
সোমবার সকাল ১০টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে দুদকের এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। অভিযোগ উঠা প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- শহীদ তাজউদ্দীন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, পাসপোর্ট অফিস, পল্লীবিদুৎ অফিস, উপজেলা নির্বাচন অফিস, ভূমি অফিস, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, বিআরটি অফিস, কৃষি ও ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট, সদর সাব-রেজিস্ট্রার অফিস, জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, বন বিভাগ, শিক্ষা অফিস, গাজীপুর জেলা প্রশাসক কার্যালয়, পুলিশ বিভাগ, ইউনিয়ন পরিষদ, তিতাশ গ্যাস, সমাজসেবা অধিদপ্তর, প্রবাসী কল্যাণ অধিদপ্তর, জীবন বীমা করপোরেশন, কারা অধিদপ্তর, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ভুমি অফিস। এরমধ্যে সবচেয়ে বেশি অভিযোগ রয়েছে ভুমি অফিসের বিরুদ্ধে।
গণশুনানিতে জানানো হয়, সরকারি সেবামূলক ও স্বায়ত্তশাসিত একাধিক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ করেন সেবাগ্রহীতারা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম ও ঘুষ নেয়ার অভিযোগ উঠে আসে। শতাধিক সেবাগ্রহীতার অভিযোগে দায়সারা জবাব দেন সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাদের এসব দায়সারা জবাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অভিযুক্ত ও অনিয়মের শিকার ব্যক্তিরা। সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পাশাপাশি অবান্তর কিছু অভিযোগও করা হয় দুদকের এই গণশুনানিতে। সোমবার ১৬৫টি অভিযোগের মধ্যে ৮৬টি অভিযোগের শুনানি হয়। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা প্রদান করেন দুদকের সচিব মো. মাহাবুব হোসেন।
দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন বলেন, ‘দুর্নীতি দমন কমিশন আইন ২০০৪-এর বিধান অনুযায়ী আজ গণশুনানি হয়েছে। কিছু অভিযোগের বিষয়ে তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া হয়েছে। কিছু অভিযোগ সমাধানের জন্য দুই-একদিন সময় চাওয়া হয়েছে। যেগুলো কিছুটা জটিল, সেসব সমাধানের জন্য এক মাস সময় নেওয়া হয়েছে। এখানে উত্থাপিত অভিযোগগুলোর শতভাগ সমাধান হবে।’
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান বলেন, ‘অভিযোগ উঠা প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের কাছে জবাব চাওয়া হয়েছে। আগামী বুধবার সেবাপ্রার্থী ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের গণশুনানিতে উপস্থাপন ও সমাধান এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
গাজীপুর জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে গণশুনানিতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন,দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন। আরও উপস্থিত ছিলেন, ঢাকা বিভাগের দুর্নীতি দমন কমিশনের পরিচালক মোরশেদ আলম, দুর্নীতি দমন কমিশনের মহাপরিচালক আক্তার হোসেন, গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান, গাজীপুর পুলিশ সুপার কাজী শরিফুল ইসলাম, গাজীপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এমএবারী এবং সাধারণ সম্পাদক মুকুল কুমার মল্লিক।