Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / ঘিওরে নদী ভাঙ্গণ: চরম আতঙ্কে এলাকাবাসী - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

ঘিওরে নদী ভাঙ্গণ: চরম আতঙ্কে এলাকাবাসী

July 04, 2022 06:56:49 AM  
ঘিওরে নদী ভাঙ্গণ: চরম আতঙ্কে এলাকাবাসী

মানিকগঞ্জ সংবাদদাতা:
পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে মানিকগঞ্জের ঘিওরে নদী ভাঙনের মাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে আশংকাজনরক হারে। পুরাতন ধলেশ্বরী ও ইছামতি নদীর পাড় এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এতে নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে শত শত একর ফসলী জমি, বসতবাড়িসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। নিঃস্ব হয়ে পড়ছে অনেক পরিবার।

সরজমিন শনিবার  দেখা গেছে, ইছামতি নদীর ভাঙ্গনে উপজেলার সদর ইউনিয়নের রছুলপুর এলাকার ১০ টি পরিবারের বসতবাড়ি এবার বিলীন হয়ে গেছে। এছাড়াও পার্শ্ববর্তী কুঠিবাড়ী, রামকান্তপুর ও কুস্তা আরো ১৫টি বসতবাড়ি নদী গর্ভে চলে গেছে। কুস্তা কফিল উদ্দিন দরজি উচ্চবিদ্যালয় ও শত বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘিওর গরুর হাট অর্ধেক বিলীন হয়ে গেছে। চরম ভাঙ্গন আতংকে রয়েছে কুস্তা ব্রিজ, ঘিওর-গোলাপ নগরের রাস্তা, বেপারীপাড়া কবরস্থান, রসুলপুর কবরস্থান, বেপারীপাড়া কবরস্থান, কুস্তা কবরস্থান, ঘিওর কেন্দ্রীয় শশ্মান ঘাট, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি উচ্চ বিদ্যালয়, মসজিদ, মন্দির, ব্রিজ, বাজার, হাট, সরকারি খাদ্য গুদামসহ বেশকিছু স্থাপনা। ভাঙ্গন রোধে স্থায়ী ও কার্যকর ব্যবস্থা না নেয়ায় ক্রমেই নাজুক আকার ধারণ করছে। ফলে এসব এলাকার লোকজনের মধ্যে চরম আতংক বিরাজ করছে।

এ ব্যাপারে ভাঙ্গণ কবলিত এলাকা রসুলপুরের বাসিন্দা ঘিওর উপজেলা যুবলীগের সাধারন সম্পাদক মোঃ শরিফুল ইসলাম জানান, পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে প্রতিবছরই নদী ভাঙ্গন শুরু হয়। আমার বাড়ি ভাঙ্গন এলাকায়, রাতে ঘুমানোর সময় হঠাৎ আঁতকে উঠি। গতবছর বর্ষায় রছুলপুর এলাকার কয়েকটি পরিবারের বাড়ি ঘর নদী গর্ভে চলে যায়। এরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে গিয়ে আশ্রয় নেয়।

চলতি বছর নদী ভাঙ্গনের সংবাদে মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ এ এম নাঈমুর রহমান দূর্জয় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ৬ টন টিআর প্রকল্পে চাল বরাদ্দ দেন। উপজেলা নির্বাহী অফিসার গত শনিবার বিকেলে ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্তদেরকে সহযোগীতা দেয়ার আশ্বাস দেন। এসময় তিনি রসুলপুর এলাকায় ভাঙন রোধে অস্থায়ী প্রতিরোধক নির্মাণ করেন। এদিকে ইছামতি নদীভাঙ্গন রোধে অস্থায়ী প্রতিরক্ষামূলক বাঁধে ধ্বস দেখা দিয়েছে। দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে ভাঙনের কবলে পরার আশংকায় রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ-মাদ্রাসা, বাজার, রাস্তাঘাটসহ শত শত বাড়ি-ঘর। গত বছর বর্ষার পূর্বে পানি উন্নয়ন বোর্ড পুরাতন ধলেশ্বরী নদীর কুস্তা, নারচী পাড়ে ভাঙ্গন রোধে নদী ভাঙ্গন রোধকল্পে প্রতিরক্ষামূলক বাঁধ নির্মাণ করেছিল। কিন্ত পানি বৃদ্ধির সাথে সাথে তীব্র স্রোতে ও নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যাচ্ছে প্রতিরক্ষামূলক বাঁধের জিও ব্যাগ। চলতি বছর বাঁধ কিংবা প্রতিরক্ষামূলক জিও ব্যাগ স্থাপনের কোনকোজ না করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ধলেশ্বরী নদীর ভাঙনে চলতি বছর শ্রীধরনগর, মাইলাগী, ঘিওর পূর্বপাড়া, ঘিওর নদীর উত্তর পাড়ের বাজার এলাকার দুটি স্থাপনা, কমপক্ষে ২০টি বসত বাড়ি নদী ভাঙনের শিকার হয়েছে। বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, ব্রিজসহ ৫টি প্রতিষ্ঠান হুমকির মধ্যে রয়েছে।

নারচী এলাকার মো. সিরাজ বলেন, সব সময় আতংকে থাকি। আমরা ত্রাণ সহায়তা চাই না। নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ চাই।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ হামিদুর রহমান বলেন, ভাঙ্গন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছি। ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে অবহিত করা হয়েছে। রছুলপুর এলাকাসহ উপজেলার ১৪-১৫ টি ভাঙ্গন এলাকার ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করে র্উদ্ধতন কতৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি। ক্ষতিগ্রস্তদের সরকারী পর্যায়ে সহযোগিতা করা হবে।