Date: May 10, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / জমি দখল করে কারখানা নির্মাণে জনদুর্ভোগ চরমে, প্রতিবাদ করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের...

জমি দখল করে কারখানা নির্মাণে জনদুর্ভোগ চরমে, প্রতিবাদ করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

August 25, 2023 07:00:24 PM   উপজেলা প্রতিনিধি
জমি দখল করে কারখানা নির্মাণে জনদুর্ভোগ চরমে, প্রতিবাদ করে বিপাকে ভুক্তভোগীরা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি:
গাজীপুরের শ্রীপুরে একটি কারখানার বিশাল আকৃতির মূল ফটকের পুরোটাই গড়ে উঠেছে বনবিভাগের বন ভূমির উপর। অপরদিকে বনবিভাগ ও কালেক্টরী খাস জমি  দখলে নিয়ে কারখানার সীমানা প্রাচীর নির্মাণ করে পানি নিষ্কাসনের ড্রেন বন্ধ করে জলাবদ্ধতার সৃষ্টির মাধ্যমে এলাকাবাসীকে পানি বন্ধী করে রেখেছে কারখানা কর্তৃপক্ষ। এ ঘটনার প্রতিবাদ করতে গিয়ে উল্টো বিপাকে পড়েছে ভুক্তভোগী নিরিহ এলাকাবাসী।

উপজেলার তেলিহাটি ইউনিয়নের জৈনা টু শ্রীপুর সংযোগ সড়কের সাইটালিয়া গ্রামে গড়ে উঠা ইরেকটস এন্ড ট্রাকচার লিমিটেড নামক একটি বৈদ্যুতিক খুঁটি তৈরি কারখানার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে একাধিক চিঠি দিয়েছে  ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।

অভিযোগ সূত্রে জানাযায়, কারখানাটির বিশাল আকৃতির মূলফটকের সামনের পুরো রাস্তাই বনবিভাগের জমির উপর দিয়ে করা হয়েছে। এছাড়াও  কারখানার ভেতরে পশ্চিম পাশে ১নং খতিয়ানের কালেক্টরি খাস জমি এবং কারখানার পুর্ব পাশে ২ নং খতিয়ানের বনবিভাগের জমি দখলে নিয়ে সীমানা প্রাচীর নির্মান করেছে কর্তৃপক্ষ। তবে কারখানার পক্ষ থেকে সীমানা নির্ধারণের আবেদন করা হলেও আলোর মূখ দেখেনি সেটা।

কারখানা কর্তৃপক্ষের মনগড়া মতো অপরিকল্পিত ভাবে সীমানা প্রাচীর নির্মানের কারনে এলাকায়  জলাবদ্ধতা সৃষ্টি এবং পানিবন্ধী হয়ে ভোগান্তিতে পড়ে পুরো এলাকার জনগণ।

ভুক্তভোগী এলাকাবাসী জলাবদ্ধতা থেকে মুক্তি পেতে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেছে এবং কারখানার গেইটের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

মানববন্ধন - বিক্ষোভ মিছিল ও অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) ও বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ কারখানা এলাকায় সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। পরে স্হানীয় প্রশাসন,  ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের সিদ্ধান্ত মোতাবেক ওই কারখানার বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যবস্হা না নিয়ে এলাকার অতি সাধারণ খেটে খাওয়া দরিদ্রদের দখলী জমির ওপর দিয়ে ড্রেন খননের কাজ শুরু করা হয়।

এ ব্যাপারে ক্ষোভ প্রকাশ করে সাইটালিয়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক ইছব আলী জানান, কারখানার বাউন্ডারিতে পানি আটকিয়ে আমাদের ফসলসহ ঘর-বাড়ি তলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রতিকার চেয়ে আমরা আন্দোলন করেছি। প্রশাসন কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে আমাদের সামান্য জমির উপর দিয়ে জোরপূর্বক ড্রেন খনন করে আমাদের রুপিত ফসল এবং গাছপালার ক্ষতিগ্রস্ত করছে।

কারখানার উৎপাদন ব্যবস্হাপক মিজানুর রহমান রানা  জানান, কারখানার গেইটের সামনের জায়গা বনবিভাগের সেটা আমি জানি কিন্তু কারখানার ভেতরে সরকারী জায়গা আছে কিনা তা আমার জানা নেই।

কারখানার জেনারেল ম্যানেজার জানান, কারখানার আশপাশে সরকারী কালেক্টরী ও বনবিভাগের জমি রয়েছে। ২০১৬ সালে কারখানার পক্ষ থেকে সীমানা নির্ধারণের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

বনবিভাগের সাতখামাইর বিট কর্মকর্তা আইয়ুব খান জানান, সীমানা নির্ধারণের কোন প্রকার তথ্য তার জানা নেই। তবে ওই কারখানার ভেতরে বনবিভাগের জমি রয়েছে, অচিরেই সেই জমি উদ্ধার করে বনায়ন করা হবে। 
শ্রীপুর রেঞ্জ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান জানান,তিনি ওই কারখানা পরিদর্শন করেছেন এবং বনের জমি আছে বলে নিশ্চিত হয়েছেন। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে সার্ভেয়ার দ্বারা সীমানা নির্ধারণ করে বনবিভাগের জমি উদ্ধার করা হবে।

শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) আল মামুন জানান,জরুরী ভিত্তিতে জলাবদ্ধতা নিরসনে, জনদুর্ভোগ লাগবে কারখানার বাহির দিয়ে ড্রেন করে পানি নিষ্কাশনের  ব্যবস্হা করা হচ্ছে। কারখানার ভেতর যে কালেক্টরী খাস জমি রয়েছে সে বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষকে নোটিশ করা হয়েছে। শিগগিরই মাপ-ঝোক করে সরকারী খাসজমি উদ্ধার করার ব্যবস্হা গ্রহণ করা হবে বলে জানান তিনি।