
রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় সংঘটিত সংঘর্ষের ঘটনায় এখনও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সহিংসতা, লুটপাট এবং অগ্নিসংযোগের ফলে চারজন নিহত হওয়ায় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানানো হয়েছে।
শুক্রবার রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়, এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নজরদারি শুরু করে। বিকেলের পর থেকে দুই পক্ষের কোনো বিক্ষোভ দেখা যায়নি, তবে চাপা উত্তেজনা এখনো বিরাজমান।
খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে সংঘর্ষে প্রাণহানির ঘটনায় সরকারের উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল শনিবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবে। এতে নেতৃত্ব দেবেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
বুধবার খাগড়াছড়ির দীঘিনালায় চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে একজন নিহত হওয়ার পর বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে। এই মিছিল থেকেই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় এবং পরবর্তীতে লারমা স্কয়ারে আগুন দিয়ে শতাধিক দোকান পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে আহতদের খাগড়াছড়ি হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনজন মারা যান। নিহতদের মধ্যে ধনঞ্জয় চাকমা, রুবেল ত্রিপুরা ও জুনান চাকমা রয়েছেন।
লারমা স্কয়ারে ১০২টি দোকানে আগুন দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে পাহাড়ি ও বাঙালি উভয়ই রয়েছেন। ব্যবসায়ীরা বিপুল ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এবং অনেকেই ঋণের বোঝা নিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ যৌথভাবে কাজ করছে।
রাঙামাটি শহরের ঐতিহ্যবাহী মৈত্রী বিহার ও বনরূপা জামে মসজিদেও হামলা চালানো হয়েছে। ভান্তে ও মসজিদ কমিটির পক্ষ থেকে এ ধরনের হামলার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর হামলার পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য থাকতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে।
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন খান ও অন্যান্য প্রশাসনিক কর্মকর্তারা সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে, এবং ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরি করে সহায়তা দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।