Date: April 29, 2024

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / কৃষি সংবাদ / ইফাদের অর্থায়নে বরিশালে ৩২৬ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের প্রকাশ

ইফাদের অর্থায়নে বরিশালে ৩২৬ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ

April 03, 2023 05:37:33 AM   দেশজুড়ে ডেস্ক
ইফাদের অর্থায়নে বরিশালে ৩২৬ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ

নিজস্ব প্রতিবেদক:
দেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণের লক্ষ্যে পটুয়াখালী সদর, কলাপাড়া ও মির্জাগঞ্জ উপজেলা এবং বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৩২৬.৮৫ একর জমিতে সূর্যমুখী চাষ করেছেন ৮০০ চাষি। ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এ্যাগরিকালচারাল ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ) এর অর্থায়নে এসব এলাকায় সূর্যমুখী ফসল চাষাবাদ করা হচ্ছে বলে জানা গেছে। এ বছরের শুরুতে “লবণাক্ত জমিতে উচ্চমূল্যমানের ফসল চাষের মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের আয়বৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান” শীর্ষক ডাম ফাউন্ডেশন ফর ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট (ডিএফইডি) ও পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের প্রোমোটিং এ্যাগরিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন এন্ড এন্টারপ্রাইজ (পিএসিই) নামে এ প্রকল্প শুরু করে।

প্রকল্প সূত্রে জানা যায়, ৮০০ জন চাষির মাধ্যমে হাইসান-৩৩ ও ৩৬ জাতের সূর্যমুখী চাষ করা হয়েছে। এছাড়া এ প্রকল্পের মাধ্যমে ১০০টি সূর্যমুখীর (হাইসান-৩৩ ও ৩৬ জাতের) প্রদশর্নী প্লট স্থাপন করা হয়েছে। প্রকল্পের মাধ্যমে সূর্যমুখী চাষিদের সূর্যমুখী চাষে জমি চাষ, সার, বীজ, কীটনাশক, গোড়ায় মাটি উঠানো ও সেচ খরচ বাবদ নগদ সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। সূর্যমুখী মাঠের বর্তমান বৃদ্ধি পর্যায় দেখে চাষিরা ভীষন খুশি এবং গত বছরের তুলনায় ভাল ফলন আশা করছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, বর্তমানে প্রকল্প এলাকায় সূর্যমুখী গাছে ফুল আসা শুরু হয়েছে। যা আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে পিক পিরিয়ডে তথা চারিদিকে ফুলের সমারোহ দৃশ্যমান হবে।

স্থানীয় চাষিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রকল্প এলাকায় প্রতি বছরই বাড়ছে সূর্যমুখী চাষ। কৃষকরাও সূর্যমুখী চাষে আগ্রহী কারণ এতে ব্যয় কম হয় এবং লাভও হয় বেশি। অন্যদিকে বাজারের চাহিদার কারণে তেল জাতীয় ফসল সরিষার পরই সূর্যমুখী এখন কৃষকদের অন্যতম অর্থকরী ফসল। এখন এই এলাকার বিস্তীর্ণ জমিতে সূর্যমুখী ফুল ফোটেছে যা দেখার জন্য প্রতিদিন যুবক-যুবতী, বাচ্চা ও সকল শ্রেনির লোক সমাগম হচ্ছে যা কৃষি-পর্যটন শিল্পের বিকাশ ঘটাবে বলে আশা করা যায়।

মূলত সূর্যমুখী একটি ‘ক্লাইমেট স্মার্ট’ ফসল। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় মাটির লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং লবণাক্ত জমিতে ধানের ফলন ভালো হয় না। যার ফলে এ অঞ্চলে আমন কাটার পর মাঠকে মাঠ জমি পতিত পড়ে থাকে।লবণাক্ত মাটিতে তেলজাতীয় ফসল সূর্যমুখী চাষ খাপ খাইয়ে নিয়েছে যা প্রতি বছর এর আওতায় জমির পরিমান বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে সরকারের কৃষি বিভাগ প্রণোদনার মাধ্যমে সরিষার পাশাপাশি সূর্যমুখী চাষে উদ্ভোধ্য করছে। যার ফলে দেশের ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরণে সূর্যমুখী ভবিষৎ সম্ভাবনাময় ফসল হিসাবে দেখা দিয়েছে।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, এ বছর চাষিরা বিঘা প্রতি ৮-১০ মন ফলন হবে আশা করছে যা গত বছরের তুলনায় বেশী। প্রতিমন সূর্যমুখীর বীজ ৩০০০-৩৫০০/- টাকা বিক্রি করা যাবে ধারণা করছে। বিঘা প্রতি খরচ হবে ৫-৬ হাজার টাকা, যা খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ১৫-২০ হাজার টাকা লাভ থাকবে। এ প্রকল্পের ফিল্ড স্টাফ সূর্যমুখী চাষিদের জমি নির্বাচন, জমি চাষ, বীজ নির্বাচন, বীজ শোধন, সার প্রয়োগ, বীজ বপন, কীটনাশক ব্যবহার, গাছের গোড়ায় মাটি তুলে দেয়া এবং সেচ দেয়া বিষয়ে নিয়মিত টেকনিক্যাল সহযোগিত প্রদান করছে। প্রকল্পের উপকারভোগীদের সূর্যমুখী সংগ্রহ করার পর তেল প্রস্তুতকরনে প্রযুক্তিগত ও বাজারজাতকরনে (বোতল ও লেভেল) নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে। ভোজ্য তেলের ঘাটতি পূরনে সরিষা তেলের পাশাপাশি সূর্যমুখী তেলের ব্যবহার ও চাষ সম্পর্কে উদ্ভোদ্ধ ও প্রচার করার লক্ষ্যে মাঠ দিবস আয়োজন করা হবে। অধিকতর প্রচারের জন্য উপজেলা পযায়ে কৃষি মেলায় অংশ গ্রহণ করবে।

এদিকে প্রোমোটিং এ্যাগরিকালচারাল কমার্শিয়ালাইজেশন এন্ড এন্টারপ্রাইজ (পিএসিই) নামক এ প্রকল্পের মাধ্যমে অত্র এলাকায় সূর্যমুখীর মৌসুমের পর ১০০ জন গ্রীষ্মকালীন পিয়াঁজ, ১০০ জন সর্জান পদ্ধতিতে সবজি চাষ ও ১০০ জন চাষিকে বেবি তরমুজ চাষে প্রযুক্তিগত ও নগদ সহায়তা প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।