
পহেলা বৈশাখ-বাংলার চিরায়ত সাংস্কৃতিক উৎসব। উৎসবমুখর এই দিনে যখন দেশজুড়ে আনন্দ-উল্লাসে মেতে উঠেছিলো সাধারণ মানুষ, তখন কুমিল্লার মনোহরগঞ্জে নেমে আসে শোকের ছায়া। দারুল কুরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাওয়া গেল এক কোমলমতি শিশুর রক্তাক্ত নিথর দেহ।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম ওয়াহিদুল আলম তাহমিদ (৬)। সে নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার বানসা গ্রামের দিনমজুর মাইন উদ্দীনের একমাত্র ছেলে। হাসনাবাদ ইউনিয়নের জিনারাগ উত্তর পাড়ায় অবস্থিত দারুল কুরআন ইসলামিয়া মাদ্রাসায় প্রথম শ্রেণিতে হিফজ বিভাগে পড়াশোনা করছিলো এই কোরআনের পাখি।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মাদ্রাসার ছাদে তাহমিদকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সহপাঠী আজহার। নাক ও মুখ দিয়ে রক্তপাত হওয়া অবস্থায় শিশুটিকে দেখে চিৎকার দিলে শিক্ষক ও অন্যান্য শিক্ষার্থীরা ছুটে আসে। পরে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়।
মনোহরগঞ্জ থানা পুলিশের একটি টিম এসে তাহমিদের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
এ বিষয়ে মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা রেদওয়ান জানান, প্রতিদিনের মতোই সকালের নামাজ ও খাবার শেষে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সবাই ঘুমাতে যায়। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরেই এই মর্মান্তিক দৃশ্য চোখে পড়ে।
নিহতের বাবা মাইন উদ্দীন বলেন, “আমি একজন গরিব দিনমজুর মানুষ। দুই মেয়ে আর একমাত্র ছেলেকে দ্বীনি শিক্ষার জন্য মাদ্রাসায় দিয়েছিলাম। ও বাবারে, আমার ছেলেটাকে কে এভাবে নিলো? আমি এর সঠিক বিচার চাই।” এই কথা বলেই তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন।
মাদ্রাসার মোহতামিম ক্বারী আবু ইউসুফ জানিয়েছেন, তিনি গত শুক্রবার থেকে ঢাকায় অবস্থান করছেন অসুস্থ মায়ের চিকিৎসার জন্য। খবর পেয়ে তিনি ঢাকার হাসপাতাল থেকে মনোহরগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
মনোহরগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বিপুল চন্দ্র দে বলেন, “ঘটনাস্থল থেকে লাশটি উদ্ধার করে কুমিল্লা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্ত রিপোর্টের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”