
রাণীনগর (নওগাঁ) সংবাদদাতা:
নওগাঁর রাণীনগরে প্রখর খড়ার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোড শেডিং। দিন-রাত মিলে ৫ঘন্টাও বিদ্যুৎ মিলছে না বলে জানিয়েছেন কৃষকরা। ফলে চলতি আমন মৌসুমে ধান রোপন নিয়ে চরম দুশ্চিনতাই পরেছেন।
তারা বলছেন, একদিকে দীর্ঘ অনাবৃষ্টি অন্যদিকে বিদ্যুতের ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারনে পানি সেচ দিতে না পারায় ধান রোপন করতে পারছেন না। ফলে সময় মতো ধান রোপন করতে না পারলে অধিক বয়সি চারা দিয়ে ধান রোপন করলে ধানের ফলন কমে যাবে বলছেন কৃষকরা। এতে চরম দুশ্চিনতাই পরেছেন তারা।
রাণীনগর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি আমন মৌসুমে উপজেলায় ১৯ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে ধান রোপনের লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এসব জমিতে ব্রি-ধান ৭৫,ব্রি-ধান ৯০, বিনা ১৯ বিনা ১৭ সহ বিভিন্ন প্রজাতির ধান রয়েছে।
দপ্তরের তথ্য মতে, জমিতে পানি না থাকায় এ পর্যন্ত মাত্র ১১.৭৬ শতাংশ জমিতে ধান রোপন করা হয়েছে।
উপজেলার গুয়াতা গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন বলেন, চলতি মৌসুমে প্রায় ১২বিঘা জমিতে ধান রোপণের জন্য চারা প্রস্তুত করেছি। কিন্তু জমিতে পানি না থাকায় ধান রোপন করতে পারছিনা।
কালীগ্রামের কৃষক আরিফ হোসেন বলেন, গত আমন মৌসুমে আগাম জাতের ধান রোপন করে ধান কাটার পরপরই জমিতে সরিষা রোপন করেছিলাম। সে সময় খরচ বাদে বিঘা প্রতি প্রায় ১৬/১৮ হাজার টাকা লাভ হয়েছিল। সে লক্ষ অনুযায়ী এবার প্রায় ১৬ বিঘা জমিতে আগাম জাতের ব্রি-ধান ৯০ রোপন করতে অনেক আগেই ধানের বীজ বপন করেছিলাম। কিন্তু পানির অভাবে জমিতে ধান রোপন করতে পারছিনা।
তিনি বলছেন, বীজ বোপনের ২৫/৩০ দিনের মধ্যেই জমিতে চারা রোপন করতে হয়। এই নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ধান রোপন করতে না পারলে বেশি বয়সি চারা রোপন করলে নানান কারনে ধানের ফলন কমে যায়। কিন্তু আকাশ থেকে বৃষ্টিও নামছেনা আবার বিদ্যুতের লোড শেডিংয়ের কারনে নলকূপ থেকে পানিও পাচ্ছিনা। ফলে সময় মতো ধান রোপন নিয়ে চরম দুশ্চিনতাই রয়েছি। কালীগ্রামের গভীর নলকূপের মালিক শুকুর উদ্দীন ,অনাবৃষ্টির কারনে গভীর নলকূপ দিয়ে পানি সেচ দিচ্ছি। কিন্তু দিন-রাত মিলে ৫ঘন্টাও বিদ্যুৎ থাকছেনা। ফলে চাহিদা অনুযায়ী জমিতে সেচ দিতে পারছিনা।
করজগ্রামের একটি নলকূপের ড্রেম্যান আব্দুর রশিদ বলেন, সকাল ১০টায় বিদ্যু’ গেছে সাড়ে ১২টায় আবার এসেছে।এরপর আধা ঘন্টা পর আবার চলে গেছে,বিকেল ৫টায় এসেছে। ফলে বিদ্যুতের এমন ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারনে জমিতে পানি সেচ দিতে পারছিনা। ফলে কৃষকরাও ধান রোপন করতে প্রাছেনা।
নওগাঁ পল্লী বিদ্যু’ সমিতি -১ এর রাণীনগর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) আকিয়াব হোসেন বলেন, উপজেলায় আবাসিক, বাণিজ্য, সেচ ও শিল্পসহ সব মিলে প্রায় ৬১ হাজার সংযোগ রয়েছে। এসব সংযোগের বিপরীতে চাহিদা রয়েছে সাড়ে ১৭-১৯মেগাওয়াট। কিন্তু সে তুলনায় কখনো অর্ধেক বা তার কম আবার কখনো অর্ধেকের একটু বেশি সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। তবে যে টুকু পাওয়া যাচ্ছে তা দিয়ে কয়েকটি ফিডারে ভাগ ভাগ করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এছাড়া চলতি মৌসুমে জমিতে পানি সেচের কারণে চাহিদা আরো বেড়ে গেছে। ফলে কিছুটা লোড শেডিং হচ্ছে। তবে দ্রুত এসমস্যার সমাধান হবে বলে আসা করছেন তিনি।