
নিজস্ব সংবাদদাতা:
ঢাকা ধানমন্ডি এলাকায় গত ১৬ আগষ্ট ২০১৯ইং শুক্রবার ভোর রাতে রিয়া আক্তার (১৩) নামে ছাদ থেকে পড়ে এক গৃহকর্মীর রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের পর বাড়ির ছাদ থেকে ফেলে হত্যার অভিযোগ তোলা হয়। এ ব্যাপারে ঢাকা বিজ্ঞ আদালতে বাড়ির মালিক মমিনুল, নুরজাহান ও আমিনুল আহসানসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে সিআর মামলা দায়ের করেন নিহতের মা কুলসুম বেগম। যার মামলা নং- ১২৯/২০২২।
এ ঘটনায় গত ১ মে ২০২২ মঙ্গলবার প্রায় ৩ বছর পর রহস্যজনক মৃত্যু কারণ, ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য গোয়েন্দা ডিবিকে বিজ্ঞ এমএম আদালত নং-৮ কবর থেকে নিহতের লাশ উত্তোলনের নির্দেশ প্রধান করেন। নিহত রিয়া টঙ্গীর আউচপাড়া এলাকার রাজু আহম্মেদ এর মেয়ে। রিয়া আক্তার টঙ্গী আউচপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করতেন। পরিবারের অভাব অনটনের কারণে রিয়া লেখাপাড়া ছেড়ে গ্রামের বাড়ি জামালপুরে চলে যায়।
উল্লেখ্য গত ৩ আগস্ট ২০১৯ইং তারিখে রিয়া ও শিমলাকে গ্রাম থেকে ধানমন্ডির ৯১নং বাসায় নিয়ে যায় কুলসুম বেগমের পরিচিত জাকির হোসেন। তার ৪/৫ দিনের মধ্যে ফোন দিয়ে রিয়া কান্নাজনিত কন্ঠে বলে মা আমি এ বাসায় ভালো নেই, আমার খুব কষ্ট হচ্ছে। ১৬ আগস্ট ২০১৯ইং তারিখ ভোরে রিয়ার গ্রামের বাড়ি কালো রঙ্গের একটি প্রাইভেটকার গিয়ে তার মা কুলসুমকে বলে আমাদের সাথে ঢাকা যেতে হবে আপনার মেয়ে রিয়া খুব অসুস্থ। নিহতের মা তাদের বাসায় যাওয়ার পর দেখে রিয়া মারা গেছে। ঠিক তখনই ১০ তলা বিল্ডিংয়ের বেলকুনিতে নিয়ে মমিুনুল বলে এখান থেকে তোমার মেয়ে রিয়া শাড়ী বেয়ে নামার সময় পড়ে মারা গেছে। তখন রিয়ার মা বলে আপনারা নির্যাতন করে আমার মেয়েকে মেরে ফেলেছেন। এমনটাই প্রলাপ করতে তারা ভয়ভীতি, হুমকি ও রিয়ার ছোট ভাইকে বাসায় আটকিয়ে রেখে বিয়ার মা ও বাবাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে একটি কাগজে স্বাক্ষর করে লাশ গাড়িতে করে গ্রামের বাড়িতে নোয়াখালী নিয়ে দাফন করা হয়। এ ঘটনায় ধানমন্ডি থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়। মামলা নং-৮/১৯।
নিহতের মা বলেন, আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে বিজ্ঞ আদালতে নারাজী দিলে ১২ মার্চ ২০২০ইং তারিখে আদালতের আদেশ মতে মামলার তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য বাংলাদেশ পুলিশ সিআইডি মালিবাগ, ঢাকাকে নির্দেশ প্রদান করেন। যাহার স্মারক নং-২২১। মামলাটি তদন্ত করেন সিআইডি পুলিশ পরির্দশক মাইনুল ইসলাম পিপিএম, মতিঝিল ইউনিট, ঢাকা।
মামলাটি সিআইডি তদন্তধীন থাকা অবস্থায় বিবাদী (১) মমিনুল আহসান (৪২), (২) নূর জাহান বেগম লাকী (৩৯), (৩) আমিনুল হাজী (৫৮), (৪) মনোয়ারা বেগম (৫৫), (৫) মো: মাঈদুল (৩৭), (৬) সুনিয়া আক্তার (১৮) এদের ষড়যন্ত্রে মামলাটি ধামাচাপা দিয়ে নিষ্পত্তি করার জন্য ইসমাইল হোসেন স্বপন এর সহযোগিতায় আমার স্বামী-সন্তানকে সন্ত্রাসী দ্বারা আটকে রেখে মামলা নিষ্পত্তি করার জন্য ইসমাইল হোসেন স্বপন আমাদেরকে ৫ শতাংশ জমি দানপত্র করেন এবং বেশকিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর করে নেন। কিছুদিন পর জানতে পারি মামলাটি সিআইডি তদন্ত রিপোর্ট থেকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি ন্যায় বিচারের স্বার্থে আইনজীবীর সাথে পরামর্শ করে বিজ্ঞ মহানগর মুখ্য হাকিম আদালতে একটি পিটিশন মামলা দায়ের করি।
মামলাটি পিবিআই গত ৪/০৭/২০২১ইং তারিখে তদন্ত গ্রহণ করে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মেহেদী হাসান। মামলা তদন্ত কালে বিভিন্ন স্বাক্ষী, জবানবন্দী, ঘটনাস্থলের বিভিন্ন ফুটেজ সংগ্রহ করে আদালতে গত ৩/৩/২০২২ পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন সিনি. সহকারী পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদন দাখিল করেন।
মামলার নিয়মিত চলমান প্রক্রিয়ায় প্রতিবেদন উপযুক্ত মনে না করায় নায় বিচারের স্বার্থে মহামান্য আদালত মামলাটি গত ১ মে ২০২২ মঙ্গলবার প্রায় ৩ বছর পর রহস্যজনক মৃত্যুর কারণ, ডিএনএ টেষ্ট করার জন্য গোয়েন্দা ডিবিকে বিজ্ঞ এমএম আদালত নং-৮ কবর থেকে নিহতের লাশ উত্তোলনের নির্দেশ প্রধান করেন।
মামলার বাদী কুলসুম বেগম প্রতিবেদককে কান্না জরিত কণ্ঠে বলেন, আমার মেয়ের মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন ও ন্যায় বিচার পেতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার এবং স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী কাছে আকুল আবেন সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষিদের সর্বচ্চ স্বাস্তির জোর দাবি জানায়।