Date: May 01, 2025

দৈনিক দেশেরপত্র

collapse
...
Home / সারাদেশ / ঢাকা / লোডশেডিংয়ের যাঁতাকলে বিপর্যস্ত ঘিওরবাসী, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীরা - দৈনিক দেশেরপত্র - মানবতার কল্যাণে সত্যের...

লোডশেডিংয়ের যাঁতাকলে বিপর্যস্ত ঘিওরবাসী, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীরা

July 06, 2022 11:03:35 AM  
লোডশেডিংয়ের যাঁতাকলে বিপর্যস্ত ঘিওরবাসী, ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীরা

আল মামুন, ভ্রাম্যমাণ সংবাদদাতা:
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের ভয়াবহ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে শেডিংয়ের কবলে পড়ে জন জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠেছে। ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর পর বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিভাগের দাবি, বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ার কারণেই এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরো ৩ থেকে ৪ দিন সময় লাগতে পারে।

স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অভিযোগ বিদ্যুৎ সংকটের কারণে চালকলসহ বিভিন্ন উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠানের উৎপাদনও ব্যাহত হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দুর্ভোগের মধ্যে রয়েছে এখানকার জনজীবন। এই পরিস্থিতি কবে ঠিক হবে তাও বলতে পারছে না পল্লী বিদ্যুৎ অফিস।

নির্বাহী প্রকৌশলী বিদ্যুৎ বিতরণ ইউনিট-১-এর আওতায় শাপলা ফিডারে নগরীর ২০টি মহল্লা ও অধিকাংশ শপিং মল, মার্কেটসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যার গ্রাহক সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি।

এদিকে গত এক সপ্তাহ ধরে পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই লোড শেডিংয়ের যাঁতাকলে জনজীবন নাকাল হচ্ছে নগরবাসীর। কখনো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কখনো বা সন্ধ্যা থেকে গভীর রাত অথবা সারা রাত ধরে চলছে লোডশেডিং। ফলে গরম আর প্রচন্ড তাপদাহে জনজীবনে নেমেছে অসহনীয় দুর্ভোগ। এতে ক্ষতির মুখে পরেছে ব্যবসায়ীসহ শিক্ষার্থীরাও।

স্থানীয়রা জানান, বিদ্যুতের লোডশেডিংয়ের কারণে জনদুর্ভোগ বেড়ে গেছে। বিদ্যুতের এই লুকোচুরির কারণে উপজেলার লাখো বাসিন্দা যেমন কষ্ট পাচ্ছেন, তেমনি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনারও ব্যাঘাত ঘটছে। অন্যদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন শিশু ও বয়োবৃদ্ধরা।

পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঘিওর জোনাল অফিস সূত্রে জানা গেছে, চাহিদা বেশি কিন্তু বরাদ্দ কম। এ জন্য এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হবে সেটা বলা যাচ্ছে না।

মঙ্গলবার উপজেলায় সরেজমিনে গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শতভাগ বিদ্যুতের আওতাধীন ঘোষণা করা হলেও সেবার মান বাড়েনি এখানো। এই মুহূর্তে উপজেলাবাসীর প্রধান সমস্যা লোডশেডিং। মাঝে মাঝে লোডশেডিং থাকে একটানা কয়েক ঘণ্টা। দিনে ৭-৮ ঘণ্টাও বিদ্যুৎ থাকে না বলে অভিযোগ করেন এখানকার স্থানীয়সহ বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ।

এদিকে এমন পরিস্থিতির জন্য কর্তৃপক্ষের অবহেলাকে দায়ী করছেন সাধারণ গ্রাহকেরা। আবার ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে কম্পিউটার, ফ্রিজ, পানির পাম্প, ফটোকপি মেশিনসহ বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্রপাতি বিকল হওয়ার ঝুঁকির আশঙ্কা করছেন অনেকে। এ ছাড়া বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদে ব্যাহত হচ্ছে নতুন ভোটারদের কার্যক্রম।

উপজেলার বানিয়াজুরী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলেন, দিনে-রাতে সমানতালে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ চলে গেলে রাতে গরমে ঘুমাতে পারছি না। রাতে ছোট বাচ্চাকে পাখার বাতাস দিয়ে ঘুম পারাতে হচ্ছে।

এসএসসি পরীক্ষার্থী রিফাত বলেন, সামনে আমার এসএসসি পরীক্ষা। কিন্তু লোডশেডিংয়ের কারণে ঠিকমতো পড়াশোনা করতে পারছি না। পড়াশোনায় বসতে না পারার কারণে ভালোভাবে প্রস্তুতি নেওয়া যাচ্ছে না।

উপজেলার নিজাম সুইটসের নাতি মো. আবির হোসেন বলেন, দিন-রাতে ৭-৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে না। এমনিতেই জ্যৈষ্ঠ মাসের থেকে এই মাসে গরম বেশি। আবার তার ওপর লোডশেডিং। কবে নাগাদ লোডশেডিং থেকে মুক্তি পাব সেটা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসও জানে না। আমাদের দোকানে বিদ্যুৎ না থাকার কারনে গাহকরা ঘুরে যায়।

এ বিষয়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ঘিওর জোনাল অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মাহবুব রহমান বলেন, গ্যাস ও জ্বালানি তেলের সংকটের কারণে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। আমাদের চাহিদা বেশি কিন্তু বরাদ্দ কম। এ জন্য এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কবে নাগাদ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে সেটা বলা যাচ্ছে না।