
নুরুজ্জামান শেখ, শরীয়তপুর:
শরীয়তপুরে এক মাদ্রাসায় শিক্ষক কর্তৃক শিশু শিক্ষার্থীকে বলাৎকারের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় নির্যাতক মাওলানা আব্দুল্লাহ শেখকে একটি দরবারে ১০০ জুতাপেটার আদেশ দেয়া হয় এবং উক্ত মাদ্রাসা থেকে বহিষ্কার করে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। শরীয়তপুর সদর পৌরসভার ৯ নং ওয়ার্ডের কাশাভোগ গ্রামের জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের দক্ষিণ পাশে অবস্থিত খাদেমুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায় এ পৈশাচিক ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় ও বলাৎকারের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবক সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার আঙ্গারিয়া ইউনিয়নের তুলাতলা গ্রামের এক প্রবাসী তার শিশু পুত্রকে আলেম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে খাদেমুল ইসলাম হিফজুল কোরআন মাদ্রাসায় নাজেরা শাখায় আবাসিক বিভাগে ভর্তি করেন। বলাৎকারের শিকার প্রবাসীপুত্র নাজেরা বিভাগের শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় থাকা অবস্থায় মাদ্রাসার শিক্ষক মাওলানা আব্দুল্লাহ শেখ কর্তৃক বলাৎকারের শিকার হয়। পরে শিশু ছাত্র বিষয়টি তার পরিবারকে জানালে শিশুটির পরিবার এবং স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। অভিভাবকগণ বিষয়টি আঙ্গারিয়ার ওসমানিয়া মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবু বক্কর সাহেবকে অবহিত করলে তিনি মীমাংসার চেষ্টা করেন।
খাদেমুল ইসলাম হিফজুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইব্রাহিম দেশেরপত্রকে জানান, বলাৎকারের বিষয়টি সত্য। আংগারিয়া ওসমানিয়া মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক মো. আবু বকর সাহেব আমার মাদ্রাসার অভিযুক্ত শিক্ষক মাওলানা আব্দুল শেখ এবং নির্যাতনের শিকার শিশু শিক্ষার্থীর অভিভাবককে তার মাদ্রাসায় ডেকে ইসলামিক শরীয়ত মোতাবেক বিচার করেন। বিচারে অপরাধী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল শেখকে ১০০ জুতাপেটার হুকুম হয়।
আংগারিয়া ওসমানিয়া মাদ্রাসার হাফেজ মাওলানা আবু বকর ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে দেশেরপত্রকে বলেন, গত সপ্তাহে ভিকটিমের পরিবার এবং অপরাধী হাফেজ মাওলানা আব্দুল্লাহ শেখ উভয়ই আমার কাছে আসে। জঘণ্য ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে আমার মাদ্রাসায়ই দরবার হয়। দরবারে অভিযুক্ত হাফেজ মাওলানা আবদুল্লাহ শেখ স্বেচ্ছায় অপরাধের কথা স্বীকার করেন। পরে অপরাধী শিক্ষক মাওলানা আব্দুল শেখকে ১০০ জুতাপেটার হুকুম হয়। তবে দরবারে ভিকটিমের পরিবার অপরাধীকে ক্ষমা করে দেয়। পরবর্তীতে খাদেমুল ইসলাম হিফজুল কুরআন মাদ্রাসা থেকে তাকে বহিষ্কারও করা হয়।
খাদেমুল ইসলাম মাদ্রাসার শিক্ষক অভিযুক্ত মো. আব্দুল্লাহ শেখ ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, এই ঘটনার সাথে আমি জড়িত নই। বলাৎকারের কাজটি করেছে খাদেমুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল হিফজুল কুরআন মাদ্রাসার পরিচালক মো. ইব্রাহিম এর ভাগিনা ছাত্র আবুজার। আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।